সিটিভি নিউজ।। মাহবুব আলম আরিফ, মুরাদনগর (কুমিল্লা)সংবাদদাতা জানান===========
নিদানী বেগম (৬৮)। স্বামী চরু মিয়া মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩০ বছর আগে। স্বামীর মৃত্যুর পর শেষ সম্বল হিসেবে পেয়েছেন থাকার একটি মাত্র ঘর। আর সেখানেই খেয়ে না খেয়ে ২ ছেলে ও ২ মেয়েকে নিয়ে জীবনের বাকিটা পথ এগোতে থাকেন। আজ ছেলে এবং মেয়েরা যতেষ্ঠ বড় হয়েছে। বিয়ে দেয়া হয়েছে ২ মেয়েকে। দুই ছেলেও বিয়ে করেছেন। তাদের সংসারেও এসেছে নতুন অতিথি। এরই মধ্যে বড় ছেলে তাজু মিয়া (৫০) বাবার রেখে যাওয়া ভিটেতে ভিটি পাকা করে বানিয়েছেন দু’টি ঘর। আর সেখানে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বেশ ভালোই আছেন। তবে ছোট ছেলে দিলু মিয়া (৪০) বেশি একটা ভালো নেই। মানসিক প্রতিবন্ধি হওয়ায় বাবার রেখে যাওয়া বসত ঘরেই স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকেন মায়ের সঙ্গে। কষ্ট হলেও কোন রকমে বাবার রেখে যাওয়া পুরনো ঘরেই দিন পার করছিলো নিদানী বেগম ও তার ছেলে দিলু মিয়ার পরিবার। তাদের এই সামান্ন ভালো থাকাটাও যেন মেনে নিতে পারেনি প্রকৃতি। গেলো কয়েক মাস আগে একটি ঝড়ে স্বামী চরু মিয়ার রেখে যাওয়া শেষ সম্বল বসত ঘরটিও হেলে পরে। কি আর করার মা আর ছেলের যেখানে দু’বেলা খাবার খেতে কষ্ঠ হয় সেখানে ঘর মেরামত সেটি দুঃস্বপ্ন ছাড়া তো আর কিছুইনা। তবে বড় ছেলের ভিটি পাকা ঘরে মায়ের জায়গা না হলেও নিদানী বেগমের খাবারের প্রতি খুব দায়িত্বশীল ছেলে তাজু মিয়া। স্ত্রীকে সাফ বলে দেয়া হয়েছে মাকে যেন ঠিকঠাক তিন বেলা খাবার দেয়া হয়। এটাই বা নিদানী বেগমের জন্য কম কিসে। স্বামীর বসত ঘরে থাকতে গিয়ে যত কষ্টই হোকনা কেন ছেলে তাজু মিয়াতো খাবার দিচ্ছে, না দিলেইবা কি করার ছিলো।
সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরে থাকা অসম্ভব হয়ে যায় মা ছেলের। তাদের এমন অবস্থা দেখেও আশপাশের আত্মীয়-স্বজন জনপ্রতিনিধি কিংবা এলাকার বিত্তশালীরা এগিয়ে আসেনি কেউ।
নিদানী বেগম ও তার ছেলের এই পরিস্থিতি মি. ফান সংগঠনের একজন সদস্যের চোখে পড়লে সে সাথে সাথে সংগঠনের বাকী সদস্যদের বিষয়টি দ্রুত জানায়। খবর পেয়ে সংগঠনের সদস্যরা কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দক্ষিণ দিলালপুর শুশুন্ডা গ্রামে নিদানী বেগমের বাড়ীতে গিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। শুরু হয় দেশে ও বিদেশে থাকা সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহের কাজ। তারই ধারাবাহিকতায় গত এক সপ্তাহের প্রটেষ্টায় ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি নতুন ঘর তৈরি করে বুধবার দুপুরে নিদানী বেগম ও তার ছেলে দিলু মিয়ার হাতে তুলে দেয়া হয় সেই ঘরের মালিকানা। আর সেই স্বপ্নের কুটিরের নাম দেয়া হয়েছে ‘ছায়ানীড়’ (২)। তাদের এমন উদ্যোগকে সালাম জানিয়েছে এলাকার সচেতন মহল। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে সংগঠনের সাথে জড়িতদের বাবা-মাও যেন এখন গর্ববোধ করছে তাদের সন্তানদের নিয়ে।
ইতিপূর্বে মি. ফান সংগঠনের সদস্যরা মোচাগাড়া গ্রামেও একটি নতুন ঘর তৈরি করে দিয়েছে। এছাড়াও এলাকায় বেশ কিছু প্রশংসনীয় কাজ করেছে তারা অসুস্থ মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেয়া, শীতবস্ত্র বিতরণ, নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরন, এতিম ছাত্রদের পোশাক প্রদানসহ জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ ব্যক্তিদের নিজ খরচে রক্ত প্রদানও করে আসছে সংগঠনের সদস্যরা।
সংবাদ প্রকাশঃ ২৩–৭–২০২০ইং । (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24 এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন। সিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=