মাছের সাথে এ কেমন শত্রুতা মানুষের! বুড়িচংয়ে ২ পুকুরে দুর্বৃত্তের দেয়া বিষে ১৮লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি 

সিটিভি নিউজ।।   সৌরভ মাহমুদ হারুন  ব্রাহ্মণপাড়া  (কুমিল্লা)  প্রতিনিধি=====কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার নাজিরা বাজার ও আরাগ আনন্দপুর এলাকায় মঙ্গলবার দিবাগত বুধবার রাতে পৃথক দুটি পুকুরে দুর্বৃত্তদের দেয়া বিষে ১৮লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দুই মাছ চাষীর। একের পর এক এমন ঘটনার জেরে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় রয়েছেন স্থানীয় মাছ চাষীরা। ন্যাক্কারজনক ও অমানবিক এমন ঘটানায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই।

উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের নাজিরা বাজার এলাকায় ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে স্থানীয়দের থেকে লিজে নিয়ে ৪০শতাংশ ডোবায় মাছের চাষ করছিলেন সোহাগ মিয়া। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, খাবার সহ গত ৮মাসে ২০সহস্রাধীক দেশীয় মাছ চাষে তিন লক্ষাধিক টাকা ব্যায় করেছেন তিনি। গতরাতে আনুমানিক ৮টার পর কে বা কারা পুকুরে বিষ দিয়েছে বলে ধারনা তার। রাত ১২টায় পুকুরের পাড়ে গিয়ে কিছু মাছ ভেসে উঠতে দেখেন। এরপর ঘন্টা খানিকের মধ্যে একে একে মরে ভেসে উঠতে থাকে ছোট বড় রুই, কাতলা, কৈ, কার্প জাতীয় সকল মাছ।

কারো সাথে শত্রুতা নেই জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ সৌখিন মাছ চাষী সোহাগ মিয়া বলেন, ” থানায় অভিযোগ করে আর কি হবে, কে বা কারা করেছে জানিনা, যারা এই কারেছে আল্লাহ তাদের বিচার করবে”

এদিকে একই রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়ন এলাকার আরাগ আনন্দপুর এলাকার শফিক মিয়ার ১৮০ শতাংশ ভূমির একটি দীঘিতে বিষ দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। দীঘিটির দেখাশোনাকারী শফিক মিয়ার ছেলে তানভীর হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে খাবার দিয়ে রাতে বাড়িতে আলে আসেন তিনি। শেষ রাতের দিকে দীঘির পাহারাদার এসে জানায় পুকুরে সব মাছ ভেসে উঠতেছে। পুকুর পাড়ে গিয়ে সন্দেহ হলে পানিতে বিষাক্ত গন্ধ পাওয়া যায়। গত ৫বছর ধরে লিজ নিয়ে মাছ করছেন তারা। কে বা কারা রাতের কোন এক সময় বিষ দিয়েছে। ১লক্ষ গোলসা মাছ, ১৫ হাজার শিং মাছ এবং  দেশীয় প্রায় ৮০ থেকে ৯০ মোন মাছ ছিলো দিঘীতে। সকাল নাগাদ সব মাছ মরে গেছে। ভাসমান কয়োক মোন মাছ সংগ্রহ করা হয়েছে। বহু মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। এবিষয়ে বুড়িচং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

সদর ইউনিস্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল হোসেন বলেন, “আল্লাহ তাদের বিচার করুন, যারা এমন জঘন্য কাজ করেছে। পুকুরের মাছগুলো দেখে খুব দুঃখ পেয়েছি। এমন কাজ কোন সুস্থ বা ভালো মানুষ করতে পারে না। এ অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছি।”

এবিষয়ে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মারুফ রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষ যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এধরণের অপরাধে জড়িতদের ছাড় দেয়া যায় না। মাছের সাথে মানুষের শত্রুতা,  বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।

মাছের সাথে এ কেমন শত্রুতা মানুষের! ক্রমেই যেন এ ন্যাক্কার জনক ঘটনা বেড়ে চলেছে কুমিল্লায়। পূর্বশত্রুতার জেরে, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ীক কিংবা সম্পত্তি বিরোধ সহ নানা কারনেই এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে প্রতিনিয়ত। মাছ কিংবা ফসলের সাথে এমন শত্রুতার জেরে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি বারবার ঘটে চলার কারনে জেলার মাছ চাষীরা রয়েছেন আতংকে। অনেকেই বাড়তি নিরাপত্তার জন্য পাহারাদার নিয়োগের পাশাপাশি সিসি ক্যামেরাও লাগিয়েছেন পুকুর ও ফিসারিতে। তবুও কিছু দিন পরপর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে কৃষকদের জন্য। যেসকল প্রতিষ্ঠান বা কীটনাশকের দোকানে এধরণের বিষ বা মেডিসিন বিক্রি করা হয় সেসব প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো। এব এমন অপকর্ম বন্ধে যথাযথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দোষীদের কঠোর ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি সচেতন নাগরিক সমাজের।

সংবাদ প্রকাশঃ  ০৩-১১-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ