প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা ঈমানী দায়িত্ব 

সিটিভি নিউজ।।     গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির।।লেখক ও কলামিস্ট===
কোরআন ও হাদিসে পরস্পর প্রতিশ্রুতি পালনের বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতি পালনের মাধ্যমে একজন সাধারণ মানুষ সমাজে অসাধারণ মানুষে পরিণত হয়ে যায়। যা তাঁকে বিশ্বাসীর মর্যাদায় পৌঁছে দেয়।
ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ফলে রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যক্তিপর্যায়ে পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতি হয় কিংবা টানাপড়েনের সৃষ্টি হয়। পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও ব্যবসায়িক লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি পালনের গুরুত্ব লিখে কিংবা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আমার নিয়ামতকে স্মরণ করো, যে নিয়ামত আমি তোমাদের দিয়েছি এবং তোমরা আমার অঙ্গীকার পূর্ণ করো, তাহলে আমি তোমাদের অঙ্গীকার পূর্ণ করব। আর কেবল আমাকেই ভয় করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৪০)
আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা অঙ্গীকারগুলো পূর্ণ করো।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ০১)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করার পর সেই অঙ্গীকার পূর্ণ করো। তোমরা পাকাপোক্ত অঙ্গীকার করার পর তা ভঙ্গ করো না এবং প্রকৃতপক্ষে তোমরা তো নিজেদের জন্য আল্লাহকে জিম্মাদার বানিয়েছো। নিশ্চয়ই আল্লাহ জানেন, যা তোমরা করো।’ (সুরা নাহল, আয়াত : ৯১)
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের ফলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে ঝগড়া-বিবাদের পরিবেশ তৈরি হয়। যাদের ওয়াদা ভঙ্গের মাধ্যমে পারস্পরিক ঝগড়া-বিবাদের পরিবেশ সৃষ্টি হবে, কেয়ামত দিবসে ওই ব্যক্তিরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং আল্লাহতায়ালা ওয়াদা ভঙ্গকারীর ব্যক্তির কাছে কেয়ামত দিবসে কৈফিয়ত তবল করবেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অথচ এর আগে আল্লাহর সঙ্গে ওয়াদা করেছিল যে, তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে না। আর আল্লাহর সঙ্গে কৃত ওয়াদা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (সুরা আজহাব, আয়াত : ১৫)
পবিত্র কোরআনে আরও বলা হয়েছে, ‘আর আল্লাহর দৃঢ়কৃত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে এবং আল্লাহ যা জোড়া লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন তা ছিন্ন করে এবং জমিন ফ্যাসাদ করে। তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭)
ওয়াদা ভঙ্গ করা মুনাফিকের আলামত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ বলেছেন, ‘মুনাফিকের আলামত তিনটি ১. কথা বললে মিথ্যা বলে, ২. ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে, ৩. তার কাছে আমানত রাখা হলে সে খেয়ানত করে।’ (বুখারি, হাদিস : ১/৩৩)
যারা ওয়াদা ভঙ্গ করবেন, তাদের সঙ্গে আল্লাহতায়ালা কেয়ামতের দিন কোনো কথা বলবেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা প্রতিশ্রুতি ও কসমগুলো সামান্য মূল্যে বিক্রি করে দেয়, পরকালে তাদের জন্য কোনো অংশই থাকবে না, সেদিন এদের সঙ্গে আল্লাহপাক কোনো কথাবার্তা বলবেন না, আল্লাহপাক তাদের দিকে তাকিয়েও দেখবেন না এবং আল্লাহপাক তাদের পবিত্রও করবেন না, এদের জন্য রয়েছে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা আল-ইমরান, আয়াত : ৭৭)
কেয়ামত দিবসে আল্লাহতায়ালা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারীর ওপর রাগান্বিত থাকবেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিমের সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য অথবা তার ভাইয়ের সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করবে, আল্লাহর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ এমন অবস্থায় ঘটবে যে, আল্লাহ তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। এ কথার সত্যতার জন্য আল্লাহতায়ালা অবতীর্ণ করেন, নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রি করে, তারা আখিরাতের নেয়ামতের কোনো অংশই পাবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬৫৯)
কেয়ামত দিবসে যদি আল্লাহতায়ালা কারও ওপর নাখোশ হয়ে যান। তাকে সাহায্য করার মতো কেউ থাকবে না। ওই ব্যক্তিকে নিশ্চিত জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হবে।সংবাদ প্রকাশঃ ০২০৬২০২৩ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like>  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ