নারায়ণগঞ্জ শহর অবৈধ রিকসা ও অটোর দখলে চরম ভোগান্তি : নিশ্চুপ সিটি করপোরেশন

সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : ব্যস্ততম শহর নারায়ণগঞ্জ। বৈধ-অবৈধ যানবাহন দিনরাত শহরের সিংহভাগ সড়ক দখল করে নেয়। তার উপর অবৈধ ব্যাটারিচালিত ও প্যাডেল রিকসার দাপট চোখে পড়ার মতো। ফলে নিত্যদের যানজটে ভোগান্তি চরমে। পুলিশ লোক দেখানো হলেও দুই-চারটি পয়েন্টে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক শহরে ঢুকতে বাধা দিলেও অন্যান্য পয়েন্ট দিয়ে প্রকাশ্যেই শহরে ঢুকছে অবৈধ ইজিবাইক। আবার অবৈধ রিকসার ছড়াছাড়ি তো আছেই। বিগত সময়ে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে দেখা গিয়েছিলন অবৈধ রিকসা প্রবেশে বাধা দিতে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে রহস্যজনক কারণে নিরব ভুমিকা পালন করছে সিটি করপোরেশন। নগরবাসীর ভোগান্তি চলমান থাকলেও অবৈধ রিকসা প্রবেশ বন্ধে নিশ্চুপ সিটি করপোরেশন।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, সিটি করপোরেশনের তিন অঞ্চলে সর্বমোট ১৫ হাজার ২০০ টি রিকশা নিবন্ধিত রয়েছে। যার মধ্যে শুধু নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে রয়েছে ১০ হাজার ৭৩৫ টি, কদম রসূল অঞ্চলে রয়েছে ৭০০টি এবং সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলে রয়েছে ৪ হাজার ৫০০টি। এর বাহিরে অবৈধভাবে চলছে অগনিত রিকশা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে চালিত অধিকাংশ রিকশায় নেই সিটি করপোরেশন নিবন্ধিত নম্বর প্লেট। শহরের ভিতর ব্যাটারি রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ হলেও শহরের অলিগলি সহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এসব যান চলছে। ৪০ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন এসব রিকশায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। অবৈধ যান চলাচল নিরসনে শহরের মন্ডলপাড়া ব্রিজ, ১ নং গেট, ২ নং গেট, মেট্রো হলের মোড়, মহিলা কলেজের মোড়, চুনকা পাঠাগার সংলগ্ন সড়ক ও জেলা পরিষদে কমিউনিটি পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। তবে সেখানে নাম মাত্র কমিউনিটি পুলিশ থাকার ফলে ট্রাফিক প্রশাসনের সামনে দিয়েই এসব যান চলছে। কিন্তু দিনের অধিকাংশ সময়ে এসব পয়েন্ট দেখা মিলে না কমিউনিটি পুলিশের। সুযোগে সহজেই ব্যাটারি রিকশা শহরে প্রবেশ করছে। এছাড়াও এসব রিকশার ব্যাটারি অবৈধপন্থায় চার্জ করায় বাড়ছে বিদ্যুতের অপচয়।
নগরবাসীর ভাষ্য, নগরে প্রচুর ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল করছে। এর আধিক্য সবচেয়ে বেশি নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের কমবেশি সব পাড়া-মহল্লাতেই। এর বাইরে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতেও এসব যান চলতে দেখা যায়। দ্রুতগতিসম্পন্ন হওয়ায় এসব যানের চালক সহজে ব্রেক কষতে পারেন না। এতে প্রায়ই সড়কে রিকশা উল্টে ঘটছে দুর্ঘটনা। এরসাথে যানজটের ভোগান্তি তো আছেই।
নিতাইগঞ্জের বাসিন্ধা পঞ্চাশোর্ধ আলআমিন নিজের ভোগান্তির বিষয় জানিয়ে বলেন, এই শহরে ছোট বেলা থেকে বড় হয়েছি। আগে ব্যাটারি চালিত রিকশা ছিল না, তখনো মানুষ চলাচল করেছে। শহরে এতো যানজটও হতো না তখন। কিন্তু এখন এসব অবৈধ রিকশার কারণে অতিরিক্ত চাপে নগরে যানজট বাড়ছে। প্যাডেলে চালিত রিকশায় সময় বেশি লাগায় অনেকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় ওঠেন। এই ব্যাটারিচালিত দিয়ে সহজে ব্রেক নেওয়া যায় না। আর এই বাহন চালানোর জন্য চালকেরা যথেষ্ট প্রশিক্ষিতও নাহ। অদক্ষ চালনায় প্রায়ই দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত লাইসেন্স পরিদর্শক শহরে লাইসেন্স বহির্ভূত রিকশার প্রসঙ্গে বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরে লাইসেন্স বহির্ভূত হাজার হাজার রিকশা চলছে। আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলেই শহরকে অবৈধ রিকশা মুক্ত করতে অভিযান করে থাকি। সবশেষ গত ২৯ মে অভিযান করে ১৪টি রিকশা আটক করা হয়েছে। প্রতিটি রিকশা চালককে নিয়ম অনুযায়ী ৩ হাজার টাকা করে ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জাহেদ পারবেজ চৌধুরী জানান, আমরা অবৈধ যান চলাচল সহ যানজট নিরসনে শহরের একাধিক স্থানে কমিউনিটি পুলিশ নিযুক্ত করেছি। কিন্তু এছাড়াও শহরে অলিগলি রয়েছে। অলিগলি দিয়ে শহরে অটোরিকশা প্রবেশ করছে। তবে আগে যদি পাঁচ হাজার অটোরিকশা ঢুকত এখন ঢুকে একশ থেকে দুইশ।

সংবাদ প্রকাশঃ  ২১-০-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ