নারায়ণগঞ্জ আদালতে স্ত্রীর আহাজারি আমাকে ফাঁসি দিয়ে খুনিদের জামিন দিন

সিটিভি নিউজ, এ আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : ‘মাত্র দুই লাখ টাকার জন্য আমার স্বামীকে মেরে পুঁতে রেখেছিল খুনিরা। সেই মামলায় আদালত তাদের যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন। আমি এই রায় মানি না। আদালতের কাছে আমার দাবি খুনিদের ছেড়ে আমাকে ফাঁসি দেওয়া হোক। আমি আর বেঁচে থাকতে চাই না। অন্যথায় আমি আদালতে সবার সামনে আত্মহত্যা করবো।’
সোমবার (২০ জুন) দুপুর পৌনে ১২টায় এভাবেই আদালতের বারান্দায় আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলী এলাকার বাসিন্দা রেহেনা আক্তার রেখা। এদিন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিনের আদালত তার স্বামী ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান চৌধুরী ওরফে সেলিম চৌধুরী হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
সেই রায়ে আলীরটেকের ডিগ্রিরচর এলাকার সালাউদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আলী ও তার কর্মচারী ফয়সালকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছেন আদালত। একইসঙ্গে সোলেমান মিয়া ও মোহাম্মদ আলী হোসেন ওরফে লেবার আলীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
তবে এই রায়ে সন্তুষ্ট নন মামলার বাদী ও নিহত কামরুজ্জামান চৌধুরী ওরফে সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী রেহেনা আক্তার রেখা। তিনি খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দাবি করেন।
আদালতের বারান্দায় কাঁদতে কাঁদতে রেহেনা আক্তার রেখা বলেন, ‘আমার স্বামী কারো সঙ্গে কোনো ঝগড়া করতেন না। তিনি কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করতেন। আর তাকে মাত্র দুই লাখ টাকার জন্য হত্যা করেছে খুনিরা। এখন আমার একমাত্র ছেলে ছাড়া কেউ নেই। খুনিরা জেল থেকে বের হয়ে আমাকে ও আমার ছেলেকেও মেরে ফেলবে। আদালতের কাছে যদি বিচার না পাই তাহলে কার কাছে বিচার পাবো। এর থেকে ভালো আমি মরে যাই। আমি আর বেঁচে থাকতে চাই না।’
রেহেনা আক্তার রেখার পুত্রবধূ ঐশী আক্তার বলেন, ‘আমি আমার শ্বশুরকে দেখিনি। কিন্তু আমার শাশুড়ির মুখ থেকে সবসময় শ্বশুরের কথা শুনে থাকি। তার মতো একজন মানুষকে হত্যা করেছে খুনিরা। কিন্তু আদালত যে রায় দিয়েছেন তা মেনে নেওয়ার মতো না। আমরা এই রায় মানি না। আদালতের কাছে যদি ন্যায়বিচার না পাই তাহলে কার কাছে গেলে ন্যায়বিচার পাবো।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. রিয়াজুর রহমান তালুকদার বলেন, আদালতে আসামিরা জবানবন্দি দিয়েছে তারাই সেলিম চৌধুরীকে হত্যা করেছে। কে কিভাবে মেরেছে সব বিবরণ দিয়েছে। তারপরও এরকম খুনিদেরকে কিভাবে যাবজ্জীবন দেওয়া হলো তা আমার বোধগম্য নয়। আদালতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেই বলছি আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি উচ্চ আদালত বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাসমীন আহমেদ বলেন, আদালত ১২ জনের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এই রায় ঘোষণা করেছেন।
২০১৯ সালের ৩১ মার্চ ফতুল্লার আলীরটেকের ডিগ্রিরচর এলাকার মোহাম্মদ আলীর ঝুটের গোডাউনে পাওনা দুই লাখ টাকা চাইতে গিয়েছিলেন কামরুজ্জামান চৌধুরী সেলিম। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে পরিকল্পিতভাবে মোহাম্মদ আলী ও তার লোকজন সেলিম চৌধুরীকে হত্যা করে বস্তাবন্দি করে গোডাউনে মাটি খুঁড়ে চাপা দিয়ে রাখেন। পরে ৯ এপ্রিল সেলিম চৌধুরীর উদ্ধার করা হয়ে। এই ঘটনায় সেলিমের স্ত্রী রেহেনা আক্তার রেখা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন।

সংবাদ প্রকাশঃ  ২০-০-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ