নাঙ্গলকোটের মমিন ষ্টোরের ৪ ডাকাত গ্রেফতারের পূর্বেই ৫ ডাকাত জামিনে মুক্তঃব্যবসায়ী ও জনমনে আতঙ্ক

সিটিভি নিউজ।।  স্টাফ রিপোর্টার:   এখনও গ্রেফতার হয়নি ৪ ডাকাত। অথচ আইনের ফাঁক-ফোকরে জামিনে ৫ ডাকাত মুক্তি পেয়ে গেছে। সঙ্গবদ্ধ এই আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্যরা এখন কুমিল্লায় আবার সক্রিয়। ফলে আতঙ্ক বিরাজ করছে নাঙ্গলকোটসহ কুমিল্লার ব্যবসায়ীদের মাঝে। আন্ত:জেলা ডাকাত দলের এই সদস্যদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলার ১৩ টি ডাকাতির মামলা চলমান। কিন্তু আদালত থেকে জামিনের কানামাছি খেলে এখন এলাকার বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। উল্লেখ্য, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে দেশের স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান ভাইয়া গ্রুপের মালিকানাধীন ব্রিটিশ ট্যোবাকো কোম্পানীর পরিবেশক মের্সাস মমিন স্টোরে গত ২৫ নভেম্বর ২০২২ রাতে দূর্ধষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা ওই প্রতিষ্ঠানের নৈশ প্রহরীকে অস্ত্রের ভয় ও হত্যার হুমকি দিয়ে অফিসের পাশের একটি কক্ষে তালা লাগিয়ে আটক করে রাখে। পর দিন ২৬ নভেম্বর-২২ মের্সাস মমিন স্টোরের অফিসে গিয়ে মুল গেইটের তালা ভাঙ্গা দেখে নিরাপত্তা প্রহরী সুলতানকে ডাকার পর কোন শব্দ না পেয়ে ভিতরে ডুকে ডাকাতির আলামত দেখতে পায়। ডাকাতরা ওই প্রতিষ্ঠানের ১৭ লাখ ১৪ হাজার ৬৪৭ টাকার বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট ও বিভিন্ন মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় গত ২৬ নভেম্বর ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সমির চক্রবর্তি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৬/৭ জন কে অভিযুক্ত করে গত নাঙ্গলকোট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নং ১০/৯৩, ধারা ৩৯৫/৯৯৭ পেনালকোড ১৮৬০ রুজু করা হয়। পরবর্তীতে মামলাটির তদন্তভার ডিবি কুমিল্লাকে দেওয়া হয়। ডিবি পুলিশ সিসিটিভি ক্যামের ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দাউদকান্দির মৃত আছমত আলীর ছেলে মামুনকে চট্রগ্রাম ডবলমুরিং থানার আগ্রবাদ এলাকা থেকে আটক করে। তার স্বীকিারোক্তি অনুযায়ী একই এলাকা থেকে তার আপন ভাই মোহাম্মদ আলী, চট্রগ্রাম পতেঙ্গা এলাকার থেকে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ভেলানগর গ্রামের মৃত. ঝান্ডু মিয়া বেপারীর ছেলে রাসেল, নাঙ্গলকোটের হাসানপুর মিজিবাড়ির বাসিন্দা মৃত. শাহ আলমের ছেলে হাবিব ওরফে রিপন ও চান্দিনা উপজেলার ইত্যরপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত. আঃ খালেকের ছেলে বাদশা কে আটক করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ডাকাতি কাজে ব্যবহারীত ১টি পিকআপ আটক করে। আটককৃত ডাকাতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরো ৪ জন ডাকাতকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। কুমিল্লা ডিবির পরিদর্শক শিবেন বিশ্বাস সাপ্তাহিক সবুজ পত্রের কাছে বলেন দাউদকান্দির ভোলা নগরের রুবেল ও শহিদুল সোনাইমুড়ির আলমগীর হোসেন ও আলমকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা এখনো চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি বলেন এসব চিহ্নিত আন্ত:জেলা ডাকাতচক্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৩ টি মামলা রয়েছে। যা হচ্ছে- ১। নাঙ্গলকোট থানার মামলা নং- ৯৩/২০২২, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭. দঃ বিঃ; ২। চট্রগ্রাম এর হাটহাজারী থানার মামলা নং- ৩০(১)২০১০, ধারা-৩৯৫/৩৯৭। দঃ বিঃ; ৩। চট্রগ্রাম এর ভূজপুর থানার মামলা নং- ৬(১)২০২৩, ধারা- ৪৫৭/৩৮০ দঃ বিঃ; ৪। চট্রগ্রাম এর ফটিকছড়ি থানার নং- ২১(৯)২০২০, ধারা- ৪৬১/৩৮০, দঃ বিঃ; ৫। চৌদ্দগ্রাম থানার মামলা নং- ৩১(৩)২০২১, ধারা- ৩৯৪ দঃ বিঃ; ৬। পতেঙ্গা মডেল থানার মামলা নং- ১৩(১১)২০২১, ধারা- ৩৯৬ দঃ বিঃ; ৭। সীতাকুন্ড থানার মামলা নং- ১৭(৫)২০০৮, ধারা- ৪৫৭/৩৮০ দঃ বিঃ; ৮। মীরসরাই থানার মামলা নং- ৪(৯)২০২০, ধারা- ৪৫৭/৩৮০/৪১১ দঃ বিঃ; ৯। ডাবলমুরিং মডেল থানার মামলা নং- ৮/১০/২০১৬, ধারা- ২২(গ) ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন। ১০। চান্দিনা থানার মামলা নং ২২/৭৬, ধারা- ৩৯৯/৪০২ দঃ বিঃ; ১১। গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার মামলা নং ৪৫/৩১৬, ধারা- ৩৯৯/৪০২ দঃ বিঃ; ১২। পটিয়া থানার মামলা নং- ২৫(৭)২০০৯, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭ দঃ বিঃ; ১৩। পটিয়া থানার মামলা নং- ৩৩(৯)২০০৯, ধারা- ৩৯৫/৩৯৭/৪১২ দঃ বিঃ। সংশ্লিষ্ট থানাগুলোর তথ্য ও সহায়তায় অবশিষ্ট ৪ ডাকাতকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে ডিবি ইন্সপেক্টর শিবেন বিশ্বাস জানান। উল্লেখ্য, সম্প্রতি আদালত থেকে আন্ত:জেলা ডাকাতদলের ৫ গ্রেফতারকৃত সদস্যের সবাই জামিনে মুক্তি পান। অথচ ৪ জন এখনও পুলিশের ধরা ছোয়ার বাইরে। ডাকাতদের এলাকায় প্রকাশ্য আনাগোনায় ব্যবসায়ী ও জনগনের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, জামিনে মুক্তি পেয়ে আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য মামুন, মোহাম্মদ আলী, বাদশা, হাবিব ওরফে রিপন ও রাসেলসহ পুলিশের ধরা ছোয়ার বাইরে থাকা রুবেল, আলমগীর, শহিদুল ও আলম আবার সক্রিয় মিশনে নেমেছে। এরা দেশের বিভিন্ন জেলায় দোকান, গোডাউন ও জুয়েলার্সে ডাকাতি সংগঠনে দারুন পটু। কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় তাদের অনেক সোর্স ও শিষ্য সমর্থক রয়েছে। যারা তাদেরকে ডাকাতির কাজে বিভিন্ন তথ্যাদি প্রদান, স্থান পরিদর্শনসহ ইতিবাচক সহায়তা করে থাকে। এই চক্রের অপরাধমূলক তৎপরতায় ইদানিং কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় চুরি ডাকাতিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। যা জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনায় স্থান পায়।

সংবাদ প্রকাশঃ ০৫০৬২০২৩ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like>  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ