না’গঞ্জের ফতুল্লায় ডিবিকে মারধর ৩৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলায় পকেটে মাদক ঢুকিয়ে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম গণপিটুনীর শিকার হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো ২০-২৫ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মাদক ব্যবসায়িদের গ্রেপ্তার করার সময় ডিবির উপর মাদক ব্যবসায়ীদের হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
ডিবির বক্তব্য হচ্ছে, সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারী) রাতে সাড়ে আটটার দিকে এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আতিকুর রহমান ও সাকিব সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পাগলা নিশ্চিন্তপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী সজিব ও জিসান কে মাদকসহ গ্রেফতার করে। এ সময় সংবাদ পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের সহোযোগি ও স্বজনেরা গ্রেফতারকৃতদের ছিনিয়ে নিতে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের মাইক্রোবাস ভাংচুর সহ তাদের কে মারধর করে। এক পর্যায়ে তারা গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ী জিসান কে ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, পাগলা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী পেচা রনি নিশ্চিন্তাপুর এলাকায় কমিউনিটি সেন্টার ব্যবসায়ী শাহজাহানের ছেলে কলেজ ছাত্র শাকিবুল হক সজিবের পকেটে মাদক দিয়ে টানা হেচরা করতে থাকে। এসময় একটি কালো কালারের হাইএস মাইক্রো (নং ঢাকা মেট্রো-ব ১৬০১৪০) দিয়ে কয়েকজন সাদা পোষাকের লোকজন আসেন। তখন পেচা রনি ওই মাইক্রোতে সজিবকে উঠানোর চেষ্টা করে। এসময় সজিব চিৎকার করলে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে মাইক্রোবাসটি আটক করে কারন জানতে চায়। তখন মাইক্রো বাসে আসা সাদা পোষাকধারীরা তাদের ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। তখন এলাকাবাসী তাদের কাছে জানতে চায় মাদক ব্যবসায়ী পেচা রনি আপনাদের গাড়িতে সজিবকে কেনো উঠালো। এনিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে মাইক্রোবাসের চার পাশের গ্লাস ভাংচুর করে উত্তেজিত লোকজন ডিবি সদস্যদের এলোপাতাড়ি ভাবে মারধর করতে থাকে। পরে খবর পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ ও অতিরিক্ত ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠি চার্জ করে জনতার রোষানল থেকে ডিবি সদস্যদের উদ্ধার করেন। এরপর শাহজাহান ও তার ছেলে সজিবকে আটক করে পুলিশ।
এ বিষয়ে শাহজাহানের স্ত্রী ফিরোজা বেগম জানান, সজিব স্থানীয় হাজি মিছির আলী কলেজে এইচএসসিতে পড়ে। দীর্ঘদিন আগে মাদক ব্যবসায়ী পেচা রনির আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ফুটবল খেলা নিয়ে সজিবের ঝগড়া হয়। সেই বিরোধের জের ধরে মাদক ব্যবসায়ী পেচা রনি আমার ছেলে সজিবকে মাদক পকেটে দিয়ে টেনে হেচরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় এলাকাবাসী পেচা রনিকে আটক করার চেষ্টা করে। তখন তার সাথে যে ডিবি পুলিশ ছিলো বিষয়টি এলাকাবাসী জানতো না। পরে সজিব ও তার বাবা শাহজাহানকে আটক করে নিয়ে গেছে ডিবি।
নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মামুন উর রশিদ জানান, উপ-পরিদর্শক আতিক মাদক বিরোধী অভিযান চালায়। এসময় কিছু মাদক ব্যবসায়ী তাদের উপর হামলা চালিয়ে মারধরসহ গাড়ি ভাংচুর করেছে। খবর পেয়ে ফোর্সসহ আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে কয়েকজনকে মাদকসহ আটক করেছি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
ওদিকে এলাকাবাসী জানান, প্রকৃত মাদক বিক্রেতা কারা, প্রশাসন তা ভালো করেই জানে। কিন্ত প্রায় প্রতিরাতে ডিবি পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় হানা দেয়। ভোররাত পর্যন্ত চলে তাদের আটক বাণিজ্য। চাহিদা মতো টাকা দিলে ছেড়ে দেয়া হয়, আর না দিলে মাদক দিয়ে ফাসিয়ে দেয়। তাদের নিয়োজিত সোর্স দিয়ে টার্গেটকৃত ব্যক্তির পকেটে কৌশলে মাদক ঢুকিয়ে দেয়া হয়। পরে সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ গিয়ে ওই ব্যক্তিকে তল্লাশি চালিয়ে মাদক উদ্ধার দেখায়। এমন নাটকের শিকার হয়ে অনেক নিরপরাধ ব্যক্তি সর্বশান্ত হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

সংবাদ প্রকাশঃ ২৩০২২০২৩ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ