ধর্ষণচেষ্টা করায় শিল দিয়ে প্রবাসীর মাথা থেতলে থানায় গৃহবধূ

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ।।   কিশোরগঞ্জে ‘ইজ্জত বাঁচাতে’ মো. আমিনুল আলম (৪৫) নামে এক ইতালি প্রবাসীকে হত্যা করে থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন এক গৃহবধূ। শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের নীলগঞ্জ রোডের শোলাকিয়া সেবাশ্রমসংলগ্ন প্রভাষক মো. খায়রুল কবীর ভূঞা সবুজের বাসায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।

নিহত আমিনুল সেবাশ্রম এলাকার মৃত আব্দুছ ছামাদের ছেলে। তিনি দুই মাস চারদিন আগে ছুটিতে ইতালি থেকে দেশে ফেরেন।    ওই গৃহবধূর নাম তাসলিমা আক্তার। তিনি জেলার হোসেনপুর উপজেলার সাহেবেরচর গ্রামের মো. নাজমুল আলমের স্ত্রী। নাজমুল কিশোরগঞ্জ সদরে গ্রামীণ ব্যাংকে কর্মরত। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি সবুজের বাসায় ভাড়া থাকেন। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকেও পুলিশ আটক করেছে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে তাসলিমা কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় এসে ডিউটি অফিসারকে জানান ইতালি প্রবাসী মো. আমিনুলের বাসায় বছর তিনেক আগে তারা ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। এ পরিচয়ের সূত্রে আমিনুল তাকে বিভিন্ন সময় মোবাইলে ফোন করে কুপ্রস্তাবসহ বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলতেন। তিনি এবং তার স্বামী বিষয়টি আমিনুলের স্ত্রীসহ আত্মীয়-স্বজনকে জানালে এতে ওই প্রবাসী ক্ষিপ্ত হন। শুক্রবার বিকেলে স্ত্রী-সন্তানদের ভাড়া বাসায় রেখে নাজমুল গ্রামের বাড়ি হোসেনপুরে যান। এ সুযোগে রাত পৌনে ১১টার দিকে আমিনুল ওই বাসায় গিয়ে তাকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা চালান। তখন নিজের ইজ্জত বাঁচাতে হাতের কাছে থাকা পাথরের শিল দিয়ে আমিনুলকে মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করেন তিনি। এতে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে প্রবাসী মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় তার মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে সেখানে ফেলে রেখেই তিনি থানায় এসেছেন।

গৃহবধূর কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ পেয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী মো. মাহফুজ হাসান সিদ্দিকী ও পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মোখলেছুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে বাসাটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পেয়ে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে প্রবাসীকে মুমূর্ষু অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ দ্রুত কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলেন। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে শনিবার ভোর ৫টার দিকে তার  মৃত্যু হয়।

এই ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুবকর সিদ্দিক জানান, ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা পাথরের শিলটি উদ্ধার করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ঘটনার নিবিড় তদন্ত চলছে। এই ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই গৃহবধূ পুলিশের হেফাজতে আছে।

সংবাদ প্রকাশঃ  ০৬-১২-২০২১ইং । (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে/লিংকে ক্লিক করুন=  

Print Friendly, PDF & Email