দেবীদ্বারে বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শহীদ শেখ কামাল’র ৭৩তম জন্মদিন পালিত

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

দূর্ভাগ্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক দলিল পত্রাদীও সরকার বা ক্ষমতার পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে
সিটিভি নিউজ।।       এবিএম আতিকুর রহমান বাশার// সংবাদদাতা জানান ====স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন মতের রাজনৈতিক দল ক্ষতায় আসার কারনে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস বা প্রামান্য চিত্র এখনো তৈরী করা সম্ভব হয়নি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক দলিল পত্রাদীও সরকার বা ক্ষমতার পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় দেবীদ্বার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইউএনও’র সভাকক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা খেলাধূলা সাংস্কৃতিক জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র ক্যাপ্টেন শহীদ শেখ কামাল’র ৭৩তম জন্মদিনের আলোচনা সভায় অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক উন নবী তালুকদার ওই বক্তব্য তুলে ধরেন।

দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক উন নবী তালুকদার’র সভাপতিত্বে এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরীফ রফিকুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওই আলোচনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা সুব্রত গোস্বামী, উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা রমেন কুমার দাস, সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার, কুমিল্লা (উঃ) জেলা মহিলা আ’লীগের সভাপতি শিরিন সুলতানা, উপজেলা আ’লীগ নেতা লুৎফর রহমান বাবুল, উপজেলা মহিলা আ’লীগ সাধারন সম্পাদক রুজিনা আক্তার প্রমূখ।
আলোচকরা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহীদ শেখ কামালের আজ ৭৩তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের এদিনে গোপালগঞ্জ জেলার টু¹িপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। ১৯৭৫সালের ১৫ আগষ্ট ইতিহাসের নির্মম ও ভয়াবহ কালরাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে তিনিও শাহাদাত বরণ করেন।
৭৫ এর ১৫ আগষ্ট নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রধান লক্ষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেও এদিনের ঘটনায় প্রথম শহীদ হন শেখ কামাল। বঙ্গবন্ধুর ছেলে পরিচয় দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রাস ফায়ারে হত্যা করা হয় শেখ কামালকে।
বাংলাদেশের শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনের শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’ এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। শেখ কামাল উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন বাংলাদেশে আধুনিক ফুট বলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসেবে তিনি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধূলায় প্রচন্ড উৎসাহ ছিল তার। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে শেখ কামাল ভারতের যেয়ে ভারতের প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির সাথে দেখা করেন। ইন্দিরাগান্ধী তাকে দিল্লিতে লেখাপড়া করার পরামর্শ দিলে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেবেন বলে জানান। শেখ কামাল স্বাধীন বাংলার প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এমএজি ওসমান গণির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি ছাত্র জীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন এবং বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক-আওয়ামীলীগ(বাকশাল) এর অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট শাহাদাত বরনের সময় তিনি সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এমএ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয় তার মৃত্যুর পর।
এর আগে তিনি শিক্ষাজীবন শুরু করেন টুঙ্গী পাড়ায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে যখন একেএম ফজলুল হকের মন্ত্রীপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তখন তিনি স্বপরিবারে ঢাকায় অবস্থান নেয়ার কারনে শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ঢাকা বিশ^ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ অনার্স ও এমএ পাশ করেন।
অথচ খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক জগতের এই মানুষটির কর্মজীবন তুলে ধরে বা তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অপপ্রচারের প্রতিকারে তেমন কোন ভূমিকা রাখেনি আওয়ামীলীগ । শেখ কামালের জীবদ্বশায় তার আচার- আচরণ, ব্যবহার, কথাবর্তায় মানুষকে মুগ্ধ করেছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পুত্র হয়েও কখনো প্রভাব খাটাননি। সাদামাঠা জীবন অতিবাহিত করে চলতেন। আর সেই মানুষটিকে অশুভ রাজনীতির গ্যারাকলে রাজনৈতিক প্রবাকান্ডায় ব্যাংক ডাকাত, মেজর ডালিমের স্ত্রীকে অপহরণকারী আখ্যা দিলেও তা ছিল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। যেটি অপপ্রচারকারীরা ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচার করে প্রচারে শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিলেন। একটি মানুষের আলোকিত জীবনকে বিষিয়ে তুলেছিলেন। তার প্রতিকারে অর্থাৎ সত্য প্রকাশে আওয়ামীলীগ একাধিকবার ক্ষমতায় থেকেও তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। মানুষের মন থেকে মিথ্যার অবসানে সত্য প্রকাশে তেমন কোন ভূমিকা আজও রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন।

সংবাদ প্রকাশঃ  ০৫-০-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন=  

Print Friendly, PDF & Email