দেবীদ্বারে নির্জন বাড়ি থেকে পা’ বাঁধা গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ।।     এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ
কুমিল্লা দেবীদ্বারে পঞ্চাশোর্ধ মাজেদা বেগম নামে এক গৃহবধূর পা বাঁধা ও কাঁদাযুক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে সোমবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় দেবীদ্বার উপজেলার ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব ফতেহাবাদ গ্রামের জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ডেপুটি কন্ট্রোলার মামুনুর-রশিদ সরকারের বাড়ির শিক্ষক মনিরুল ইসলাম সরকার’র ঘরে।
প্রতিবেশী মোঃ হান্নান সরকার বলেন, পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ (সোমবার) সকাল ৯ টায় এ বাড়ির গাছ গাছালীর ডাল-পালা কেটে পরিস্কার করার জন্য আসি। বাড়ির প্রধান গেইট খোলা দেখে বাড়ির ভেতরে ঢুকে ভাবীকে ডাকতে থাকি। কোন সাড়া না পেয়ে ঘরের সামনে গিয়ে দেখি ঘরের দরজা খোলা। পর্দা টেনে দেখি কাদামাখা শরীর নিয়ে মেঝেতে মাথা উত্তর দিকে এবং পা দক্ষিন দিকে থাকা অবস্থায় চিত হয়ে পড়ে আছেন। ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে ধাক্কা দিয়ে দেখি, শরীর ঠান্ডা এবং শক্ত। শিওড়ের পাশে কাদাযুক্ত একটি বালিশ পড়ে আছে। দু’টি পা ওড়না দিয়ে বাঁধা রয়েছে। আমার চিৎকার চেচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, নিহত গৃহবধূ মাজেদা বেগম(৫২) দুই পুত্র ও দুই কণ্যা সন্তানের জননী। স্বামী প্রায় ৩২ বছর পূর্বে মারা গেছেন। কণ্যারা থাকেন স্বামীর বাড়িতে আর পুত্ররা কর্মস্থলে, তাই তিনি নির্জন এ বাড়িতে একাই থাকতেন। নিহতার পরিবার প্রায় ৭/৮ বছর পূর্বে ফতেহাবাদ মতিউল্লাহ সরকার বাড়ি থেকে ছেড়ে এসে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন।
সংবাদ পেয়ে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এস,আই) ইখতিয়ার আহমেদ দুপুর ১২টায় একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতার মরদেহ উদ্ধার করেন।
স্থানীয় আব্দুস সোবহান জানান, নিহতার স্বামী স্বামী শিক্ষক মনিরুল ইসলাম সরকার ১৯৮৯সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দুই পুত্র ও দুই কণ্যা সন্তানের মধ্যে কণ্যা শারমিন আক্তার বকুল ও তানজিনা আক্তার শিমু’র বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে থাকেন। বড় ছেলে মোঃ শরিফুল ইসলাম কুমিল্লা একটি ঔষধ কোম্পানীতে চাকরি করেন। ছোট ছেলে কুমিল্লা পলিটেকনিক্যাল ইনিষ্টিটিউট থেকে পাশ করে ঢাকা গাজীপুর ‘সানোয়ার ষ্টিল এন্ড কিং কোম্পানী লিমিটেড-এ ইন্টারনিশীপ করছেন। তিনি যে বাড়িতে থাকতেন ওই বাড়িতে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি চৌচালা টিনের থাকার ঘর ও একটি রান্নাঘর ছিল। ভিটি পাকা হলেও ভেতরের ফ্লোর ছিল কাচা মাটির। বাড়ির চতুরপার্শে¦ টিন ও বাঁশের বেড়ায় বেষ্টুনি ছিল।
প্রতিবেশী আমেনা বেগম জানান, এলাকায় উঠতি মাদকাসক্ত তরুন-যুবকদের সংখ্যা বেড়েগেছে। অর্থের জন্য ওরা এমন কাজটি করতে পারে বলেও তিনি ধারনা করছেন। নিহতা গৃহবধূর গলার স্বর্ণের চিকন চেইন, কানের দুল, হাতের চিকন চুরি ছিল, সেগুলি নেই। ঘরের সাঝগোছ পরিপাটি থাকলেও সোকেসের ড্রয়ার খোলা এবং বিছানা এলোমেলো ছিল। দুটি পা ওড়না দিয়ে বাঁধা ছিল। গালে নখের আচরের ছোপ ছোপ দাগ ছিল। মদেহের শিয়রের পাশে একটি বালিশ পড়ে ছিল, ধারনা করা হচ্ছে ওই বালিশ দিয়ে তাকে শ^াসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তাকে হত্যা করে ঘরের মেঝেতে উত্তর দক্ষিণমূখী করে শুইয়ে রেখেছে। সমস্ত শরীর ভেজা ও কোমরের নিচের অংশ কাঁদা মাটিতে ভরা ছিল। শ^াসরোধ করে হত্যার সময় প্রশ্রাব করলে ধস্তা ধস্তিতে শরীরের কোমরের নিচের অংশের কাঁদা মাখা হলেও ঘরের মেঝেতে মাটি উঠেছে সেরকম কোন আলামত দেখা যায়নি। বাড়ির বাহিরে কাঁদা পানিতে ধস্তা ধস্তির সময় কাঁদাযুক্ত হতে পারে। সম্পূর্ণ বিষয়টি পুলিশের সঠিক তদন্তে বেড়িয়ে আসবে।
এব্যপারে বিকেল পৌনে ৩টায় দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আরিফুর রহমান’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ঘটনাস্থলে দেবীদ্বার থানার উপ-পরিদর্শক(এস,আই) ইখতিয়ারকে পাঠিয়েছি। আমি নিজেও যাচ্ছি। তবে তার স্বাভাবিক মৃত্যু ছিলনা, পা’ বাধা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে।  সংবাদ প্রকাশঃ  ০৭২০২১ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে অথবা লিংকে ক্লিক করুন=  

Print Friendly, PDF & Email