জুতা পায়ে ৭১’র শহিদদের গণকবরে ইউএনও!

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ।।     মোঃ জুয়েল রানা মজুমদার কুমিল্লা প্রতিনিধি==========
২৫ মার্চ বিকালে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল ‘হাড়াতলী স্মৃতি ফলকে’ মোমবাতি প্রজ্বলন করেন কুমিল্লার লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফোরকান এলাহি অনুপম, এসিল্যান্ড নাছরীন আক্তারসহ উপজেলার কয়েকজন কর্মকর্তা, পুলিশের একটি দল ও স্থানীয় বেলঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মালেক। এরপর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্মৃতি ফলকে শহিদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার। শ্রদ্ধা জানানোর সময় ইউএনও সহ অন্যান্যদের পায়ে জুতা ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে বীরমুক্তিযোদ্ধা, আলেম ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
২৫ মার্চ রাত ৮.৫৪টায় ‘ইউএনও লালমাই কুমিল্লা’ নামীয় ফেসবুক আইডিতে ইউএনও নিজেই কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন। একটি ছবিতে দেখা যায়, গণ-কবরের বেস্টনীতে প্রবেশ করে স্মৃতি ফলকে গিয়ে জুতা পায়ে ইউএনওসহ অন্যান্যরা পুস্পস্তবক অর্পন করছেন।
লালমাই উপজেলার আলীশ্বর গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা দ্বীন মোহাম্মদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখন বীরমুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করলে কোন বিচার হয় না। বিভিন্ন প্রোগ্রামে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের ডেকে নিয়ে স্কুলের বাচ্চাদের মতো বেঞ্চে বসিয়ে রাখে আর রাজাকারের ছেলেরা মঞ্চে বসে কথা বলে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা ছাড়া আর কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের হৃদয় থেকে বোঝে না। জুতা নিয়ে গণকবরে প্রবেশের তীব্র নিন্দা জানাই।
কুমিল্লা জেলা কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, যারা হাড়াতলী গণকবরে জুতা নিয়ে প্রবেশ করেছেন তারা স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহিদদের অপমান করেছেন। তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক বলেন, মুসলমানদের কবরে গেলেও জুতা খোলে যেতে হয়। গণকবরে জুতা নিয়ে প্রবেশ করে ইউএনও বীর শহিদদের অপমান করেছেন। এটা অন্যায়। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সেখানে আমারও যাওয়ার কথা ছিল। শরীর অসুস্থ থাকায় শ্রদ্ধা জানাতে যেতে পারিনি।
এবিষয়ে কথা বলতে লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফোরকান এলাহি অনুপম এর সরকারি নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর বেলঘর ইউনিয়নের (বর্তমান বেলঘর উত্তর ইউনিয়ন) হাড়াতলীতে পাক সেনাদের সাথে দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ চলে। এতে বীরমুক্তিযোদ্ধা মোখলেছুর রহমান, হারুনুর রশিদ, দেলোয়ার হোসেন, মনোরঞ্জন সিংহ ও ইজ্জত আলী শহিদ হন (তথ্য: মুক্তি সংগ্রামে কুমিল্লা, পৃষ্ঠা ৮১)। যুদ্ধের পরে রাতেই স্থানীয়রা ৫জন শহিদ বীরমুক্তিযোদ্ধার মরদেহ হাড়াতলী সড়কের মোড়ে গণকবরস্থ করেন। দেশ স্বাধীনের পরে সেই সমাধিস্থলেই শহিদদের স্মরণে স্মৃতি ফলক নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে সমাধিস্থলে বেস্টরি নির্মাণসহ সংস্কার করা হয়। প্রতি বছর ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় সরকারিভাবে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহিদদের স্মৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সংবাদ প্রকাশঃ ২৭০৩২০২৩ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

Print Friendly, PDF & Email