জামালপুরে সদর হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

 তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে চিকিৎসকদের দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে বলে ওই সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কর্মবিরতি প্রত্যাহার করায় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে এবং বাইরে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে চিকিৎসাসেবা অচল হয়ে পড়ায় সদর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি ৩০ ডিসেম্বর বেলা ১২টায় জরুরি রুদ্ধদ্বার সভা ডাকেন। হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ সভা চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। সভায় সভাপতিত্ব করেন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন এমপি –

সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ জেলা শাখার আহ্বায়ক চিকিৎসক মো. মোশায়ের-উল-ইসলাম রতন, সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমানসহ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সকল সদস্য, চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে দুপুর ২টায় ওই সভাকক্ষেই এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় সভার সভাপতি প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন এমপি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজকের সভায় শান্তিপূর্ণ আলোচনার ভিত্তিতে চিকিৎসকরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে হাসপাতালে এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে দ্রুত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা হবে।’

সভায় উপস্থিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ জেলা শাখার আহ্বায়ক চিকিৎসক মো. মোশায়ের-উল-ইসলাম রতন ও সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তারা দু’জন সাংবাদিকদের জানান, সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হামলা, ভাংচুর ও চিকিৎসকদের নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে পর্যায়ক্রমে চিকিৎসকদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস পেয়েছি সভা থেকে। তাই এই মুহূর্ত থেকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হল।

প্রসঙ্গত, জামালপুর শহরের ইকবালপুর এলাকার গুরুতর অসুস্থ করিমন (৬৪) নামের এক নারী রোগী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে জামালপুর সদর হাসপাতালে মারা যান। চিকিৎসকদের অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ তুলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীর স্বজনদের হামলায় চিকিৎসা কর্মকর্তা চিকিৎসক চিরঞ্জীব সরকারসহ চারজন ইন্টার্ন চিকিৎসক গুরুতর আহত হন। এর জের ধরে বহিরাগত লোকজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় কয়েকজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও সদরের ইউএইচএফপিও চিকিৎসক মো. লুৎফর রহমান পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন বলে চিকিৎসকরা অভিযোগ করে আসছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মামলায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মুক্তি এবং চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর ঘটনার সাথে জড়িত চিকিৎসকদের শাস্তির দাবিতে ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে শহরের বকুলতলা মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে রোগীর স্বজন ও ইকবালপুর এলাকাবাসী। অন্যদিকে চিকিৎসকদের লাগাতার কর্মবিরতির কারণে সদর হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা অচল হয়ে পড়ে। ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হতে হয় রোগী ও রোগীর স্বজনদের। ঘটনার সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি ৩০ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে তাদের তদন্ত প্রতিবেদনও পেশ করেছেন। তবে আন্দোলনের পাঁচদিনের মাথায় ৩০ ডিসেম্বর চিকিৎসকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরে যাওয়ায় চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশী সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।  সংবাদ প্রকাশঃ  ৩১১২২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ