গণপরিবহনের ভাড়া না বাড়ানোর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির

সিটিভি নিউজ।।  করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের জারি করা নতুন বিধিনিষেধে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা জারির পরিপ্রেক্ষিতে বাসভাড়া আবারও বাড়াতে চান পরিবহন মালিকেরা। কিন্তু যাত্রী কল্যাণ সমিতির দাবি, কোনোভাবেই যেন পরিবহন মালিকেরা নতুন করে ভাড়া না বাড়ায়। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান। একই সঙ্গে ভাড়া বাড়াতে যে কোনো ধরনের পাঁয়তারা বন্ধের দাবিও জানান তিনি।সংগঠনটি বলছে, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব প্রতিষ্ঠানই খোলা। এখন গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত কাগুজে সিদ্ধান্তে পরিণত হবে। এ অজুহাতে আবারও ভাড়া বাড়ানো হলে সাধারণ মানুষের জীবন বিষিয়ে উঠবে। তাই ‘যত সিট তত যাত্রী’ পদ্ধতিতে গণপরিবহনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।মোজাম্মেল হক বলেন, করোনার সংকটে পৃথিবীর দেশে দেশে গণপরিবহনে যাত্রী কমেছে। অর্ধেক আসনে যাত্রীবহন করেও প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গণপরিবহনে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। ২০২১ সালে দেশের গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহনের নির্দেশনায় ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হলেও রাজধানীর বাসে কোথাও কোথাও ১০০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া আদায়ের নজির রয়েছে।

সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, করোনার সংকটকালে বাসে ভাড়া বাড়ানোর অজুহাতে লেগুনা, টেম্পু, অটোরিকশা, রিকশায়ও ভাড়া বহুগুণ বাড়তি আদায় করা হয়েছিল। যা আয় কমে যাওয়া সাধারণ মানুষের সংকটককে আরও ঘণীভূত করে। তাছাড়া রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহনের সংকট রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে যাত্রীরা বাদুড়ঝোলা হয়ে গাদাগাদি করে যাতায়াত করেন। জীবন-জীবিকা সবকিছু স্বাভাবিক রাখার এ চিত্র সামনে রেখে গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত কখনো বাস্তবায়ন করা যাবে না।এ ছাড়াও সংগঠনটি সংক্রমণ প্রতিরোধে গণপরিবহনে যাত্রী, চালক-সহকারী সবাইকে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে বাধ্য করা, যাত্রী ওঠা-নামার সময় হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার, একজন যাত্রী নামার পর তার আসনে জীবাণুনাশক ব্যবহার এবং যানবাহন চালুর আগে জীবাণুনাশক ব্যবহার করার দাবি জানায়।

অসুস্থ, করোনা আক্রান্ত, সংক্রমণ সন্দেহে চিকিৎসা অথবা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যাতায়াতে গণপরিবহন ব্যবহার এড়িয়ে ব্যক্তিগত পরিবহন অথবা প্রাইভেট পরিবহন ব্যবহারের জন্য যাত্রী সাধারণকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

এর আগে ২০২০ সালে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। সে সময় অর্ধেক যাত্রী নিয়েই গণপরিবহন চলাচল করেছিল। তখন পরিবহন মালিকদের দাবির মুখে বাসভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল।

সে বিষয়টিকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ সময় নিউজকে বলেন, গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চলাচলের নির্দেশনা আমরা দেখেছি। কিন্তু বাসভাড়া নিয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। তার অর্থ হচ্ছে আগের মতোই ভাড়া কার্যকর থাকবে।

তিনি বলেন, যদিও আমরা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। ভাড়ার বিষয়ে সরকারের নতুন কোনো নির্দেশ না পেলে ভাড়া আগের মতোই বাড়তে পারে। আর নতুন নির্দেশনা পেলে ওই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।

এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, বর্তমানে যে বাসভাড়া আছে, সেই ভাড়ায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল করলে তেলের পয়সাও উঠবে না।পরিবহন ভাড়া বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষও। তিনি বলেন, আগেরবার বিধিনিষেধ চলাকালে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এবার কি হবে সেটি এখনও বলতে পারছি না।

তিনি বলেন, আমরা সরকারের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। দেখা যাক কি হয়। তবে মালিকেরা ক্ষতি স্বীকার করে, বাড়ি থেকে টাকা এনে গাড়ি চালাবে না।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে ১১টি বিধিনিষেধ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ ১১ দফা নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দোকান, শপিং মল ও বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা এবং হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব জনসমাগমস্থলে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। অন্যথায় তাকে আইনানুগ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। অফিস-আদালতসহ ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যত্যয় রোধে সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। এছাড়াও রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ এবং আবাসিক হোটেলে থাকার জন্য অবশ্যই করোনা টিকা সনদ প্রদর্শন করতে হবে।

সংবাদ প্রকাশঃ  ১১-০১-২০২২ইং । (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে/লিংকে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ