ক্ষুধার্তদের খাদ্য নিশ্চিতে ঐক্যের ডাক প্রধানমন্ত্রীর

সিটিভি নিউজ।।      দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষুধার্ত মানুষের খাদ্য নিশ্চিতে সবাইকে এক হয়ে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে লক্ষ্য অর্জনে এই অঞ্চলের দেশগুলোকে নিজেদের মধ্যে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো, প্রযুক্তি বিনিময় এবং কৃষি অর্থায়নে বিশেষ আঞ্চলিক তহবিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্য এবং কৃষি সংস্থার (এফএও) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩৬তম কনফারেন্সের উদ্বোধন করে সদস্য দেশগুলোর প্রতি তিনি এ আহ্বান জানান। ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবু ধাবি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে এবারই প্রথম এফএও এর এই আঞ্চলিক সম্মেলন বসেছে, যাতে ৪৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী, এনজিও ও নাগরিক সমাজের ৯০০ প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে বলেন, ‘জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই নিঃসন্দেহে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৩০ কোটি ৫৭ লাখ মানুষ এখনও খাদ্যাভাবের শিকার। আমরা সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে তাদের জন্য সহজে খাবারের ব্যবস্থা করতে পারি।’

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিনটি প্রস্তাব ভাষণে তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। প্রথমটিতে এশিয়া ও প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর সুপারিশ করেন তিনি। দ্বিতীয় প্রস্তাবে শেখ হাসিনা এ অঞ্চলের এফএও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি এবং রোবটিক্সের মতো আধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তর ও জ্ঞান বিনিময় বাড়ানোর কথা বলেন। তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক কৃষিতে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন, তাই কৃষিতে অর্থায়ন ও সহায়তার জন্য বিশেষ তহবিল তৈরি করা যেতে পারে।

১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের ২৯তম অধিবেশনে দেওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম ভাষণকে উদ্ধৃত করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আসুন আমরা একসাথে এমন একটি বিশ্ব তৈরি করি যা দারিদ্র্য, ক্ষুধা, যুদ্ধ এবং মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে পারে এবং মানবতার কল্যাণের জন্য বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা অর্জন করতে পারে।’

করোনাভাইরাস মহামারী অন্যান্য খাতের মত কৃষি খাতকেও যে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০ সালে মহামারীর প্রাথমিক পর্যায়ে সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছিল, যা উৎপাদক ও ভোক্তা দুই পক্ষকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের সময়োচিত এবং কার্যকর হস্তক্ষেপে এ খাত দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে। আমরা যান্ত্রিকীকরণসহ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি যাতে বাধাহীনভাবে খাদ্য উৎপাদন এবং কৃষি উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারী দেখিয়েছে, এই ধরনের বিপর্যয়ের মুখে মানুষ কতটা অসহায়। আর মানবজাতি কীভাবে একসাথে কাজ করে এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে, সেটাও এ মহামারী দেখিয়েছে।’

কৃষির উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেওয়া নানা উদ্যোগ এবং আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কৃষি এখন বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। তাই এখন মান বৃদ্ধি এবং বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিতে হবে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্র আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মহাপরিচালক কিউ দোইয়ুং ও কৃষি সচিব সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

সংবাদ প্রকাশঃ  ১১-০৩-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে/লিংকে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ