কুমিল্লায় ভাইফোঁটা উৎসব পালিত

সিটিভি নিউজ।।    সংবাদদাতা জানান ====      ০৬ নভেম্বর ২০২১ খ্রি. শনিবার দিনব্যাপী সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাসাবাড়ীতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় ঘরোয়া পরিবেশে বাঙালি হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ সামাজিক অনুষ্ঠান ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা উৎসব পালিত হয়।
জানা যায়- শুভ দিনের পরম পবিত্র লগ্নে  ভাই-বোনের মধুর সম্পর্কের পুনঃ নবীকরণ করে নেওয়া হয় প্রতি বছর। শৈশবের হারিয়ে যাওয়া মধুর এই দিনটিতে বড় বেশি করে মনে পড়ে যায়। ভাই-বোনের স্নেহ ভালোবাসার সম্পর্কের প্রকাশ ভাইফোঁটা আচার অনুষ্ঠানটি মন কেড়ে নেয়। একটি অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে চিরন্তন আবেগ অনুভূতিই জীবন্ত হয়ে ওঠে। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষে দ্বিতীয় তিথিতে বোন তাঁর ভাইকে পরম যত্ন সহকারে একটি সুন্দর আসনে বসিয়ে হেমন্তের শিশির ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে হাতের তিন আঙ্গুলের সাহায্যে বোন তাঁর ভাইয়ের কপাল ধুয়ে দেয়। এরপর বোন তার কনিষ্ঠা আঙ্গুল দিয়ে একইভাবে চন্দন তিলক এঁকে দিয়ে ছড়া কেটে বলে “ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা, যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দেই আমার ভাইকে ফোঁটা।”
এ বিষয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার বলেন- দীপাবলির একদিন পরেই ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা।হেমন্তের পবিত্র শিশির দিয়ে বোন তাঁর ভাইয়ের সব অশুভ, অমঙ্গল ও অকল্যাণকর শক্তিকে ধুয়ে দেয়। সুগন্ধি চন্দন তিলক ললাটে এঁকে দিয়ে এনে দেয় সৌভাগ্যের পরশমনি। তারই সঙ্গে অমরত্বের প্রতীক দুর্বা আর ধনের প্রতীক ধান দিয়ে প্রার্থনা বা আশীর্বাদ বা তার মঙ্গল কামনা করেন। তিনি আরো বলেন- যমী (যমুনা) তার ভাই যমকে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে নিজ গৃহে এনে পূজা করে ভোজনে আপ্যায়িত করেছিলেন। জনশ্রুতি আছে, সেই থেকে অধ্যাবদি বিপুুুল উৎসাহউদ্দীপনায় ঘরোয়া পরিবেশে পালিত হয়ে আসছে বাঙালি হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ সামাজিক অনুষ্ঠান ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা উৎসব। অন্যদিকে, ১৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে আচার্য সবানন্দ সুবীর পুঁথির শেষ শ্লোকে বলা হয় মহাবীরের জীবনবাসন হলে রাজা নন্দী বর্ধন বোনের শোক নিবারণের জন্য বোনকে বুঝিয়ে আদর যত্ন করে আপ্যায়ন করেছিলেন। ভ্রাতৃদ্বিতীয়া যমের দুয়ারে কাঁটা দিয়ে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু ও সৌভাগ্য কামনা করা হয়। ভাইফোঁটার দিনে বোনেরা তাদের দাদা বা ভাইকে নিজের বাড়ীতে নিমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করে এবং ভাইয়েরাও বোনদের প্রাণ ভরে আর্শীবাদ করে। ভাগ্নিরা ভাইয়ের কপালে চন্দন ও কুমকুমের তিলক বা ফোঁটা এঁকে দিলে কেউ তার ক্ষতি করতে পারবেনা।  সেজন্যই বোনেরা ভাইয়ের হাতে রাখি বেঁধে দেয়। এভাবে বোনেরা ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করে। এরপর ভাইকে ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি খাওয়ায়। ভাইও তার সাধ্যমত বোনকে কিছু উপহার বা টাকা দেয়। পশ্চিমবঙ্গের ন্যায় বাংলাদেশেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে পালিত হয় বাঙালি হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ সামাজিক অনুষ্ঠান ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা উৎসব।
এদিকে, তারই ধারাবাহিকতায় কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ নগরীর কালিয়াজুরীতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নেতা কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার এর একমাত্র মেয়ে অর্পিতা সরকার তাঁর একমাত্র ছোটভাই অরন্য সরকার প্রিন্স এর কপালে চন্দন দিয়ে ফোঁটা এঁকে ছড়া কেটে বলেন “ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা, যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দেই আমার ভাইকে ফোঁটা।”  এভাবেই ভ্রাতৃদ্বিতীয়া যমের দুয়ারে কাঁটা দিয়ে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু ও সৌভাগ্য কামনা করেন বোন।সংবাদ প্রকাশঃ  ০৬-১১-২০২১ইং । (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে/লিংকে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ