সিটিভি নিউজ।। টাঙ্গাইলের কামরুন্নাহার নামের এক যুবতীর সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়, অতঃপর বিয়ে। অবশেষে সব হারিয়ে আদালতে নবী নেওয়াজ (৩৫) নামের এক যুবক। পরে প্রেম-বিয়ে-বিচ্ছেদে প্রায় ৩০ লাখ টাকা খোয়ালেন ওই যুবক।
ভুক্তভোগী নবী নেওয়াজ জেলার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের পয়াব গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে। তিনি কুমিল্লা শহরে ঠিকাদারি ব্যবসা করেন।
অভিযুক্ত কামরুন্নাহার সীমা (২৬) টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার চন্দ্রবাড়ি গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে। সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেমোথেরাপি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নবী নেওয়াজ বাদী হয়ে প্রতারণার অভিযোগে কুমিল্লার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তিনি জানিয়েছেন, বিগত ২০১৮ সালে ফেসবুকে কামরুন্নাহার সীমার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন চুয়াডাঙ্গায় একটি নার্সিং ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করত সীমা। পরে ২০২০ সালের আগস্টে বিয়ে করেন তারা।
বিয়ের পর উভয়ে কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। ৩ থেকে ৪ মাস পর কুমিল্লা টাওয়ার হসপিটালে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে যোগদান করেন সীমা। কিছুদিন সেখানে চাকরি করার পর যোগ দেন কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা মুন স্পেশালাইজড হসপিটালে। তার কয়েকমাস পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্সের চাকরি নিয়ে দেন নবী নেওয়াজ। সরকারি চাকরি পাইয়ে দিতে ১০ লাখ টাকা খরচ করেছেন বলে জানিয়েছেন নেওয়াজ।
সরকারি চাকরি হওয়ার পর নেওয়াজের গুরুত্বটা কমে যায় সীমার কাছে। ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরি হয় উভয়ের মধ্যে।
নেওয়াজ জানিয়েছেন, কামরুন্নাহার ঢাকায় যাওয়ার পর কেমন জানি পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমার ফোন তুলতে চাইত না, ব্যস্ততা দেখাত। বেশির ভাগ সময় নম্বর ব্লক করে রাখত। পরে আমি তার সঙ্গে কৌশলে দেখা করি। ধীরে ধীরে জানতে পারি এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়েছে সে। বুঝতে পেরে তাকে শুধরানোর চেষ্টা করি। কুমিল্লায় আসতে বলি। পরে সে (কামরুন্নাহার) তার বাবা-মা কে নিয়ে কুমিল্লার ভাড়া বাসায় বেড়াতে আসে। কয়েক দিন ভালো থাকার পর তার বাবা-মা জমি কেনার নাম করে আমার কাছ থেকে ১০ লাখ ৬৬ হাজার টাকা ধার নেয়। টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তা দিতে বিলম্ব হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ শুরু হয়। এরপর আবার ঢাকায় চলে যায় কামরুন্নাহার সীমা। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আবার কুমিল্লার ভাড়া বাসায় আসে সীমা। তিন দিন কুমিল্লায় অবস্থানের পর নবী নেওয়াজ গ্রামের বাড়িতে গেলে এ সুযোগে বাসার আলমারিতে থাকা ৭ লাখ টাকা নিয়ে নেওয়াজের অগোচরে ঢাকায় চলে যায় সীমা। পরে তার কাছে আগের পাওনা টাকা এবং গোপনে নেওয়া ৭ লাখ টাকার বিষয়ে বললে সে এবং তার পরিবার মামলা-হামলার ভয় দেখায়। পরবর্তীতে চলতি বছরের মে মাসে নবী নেওয়াজকে ডিভোর্স লেটার পাঠায় সীমা। তার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে পাত্তা না পাওয়ায় চলতি বছরের জুনে প্রতারণার অভিযোগে কুমিল্লার আদালতে মামলা দায়ের করেন নবী নেওয়াজ। মামলাটি কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত কামরুন্নাহার সীমাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কামরুন্নাহার সীমার মা শাহিদা বেগম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ সকল অভিযোগ মিথ্যা। তার সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বনিবনা না হওয়ায় ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। টাকা-পয়সার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার মেয়ে কখনও এমন চরিত্রের নয়।
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)