কুমিল্লায় দ্বিগুণ মুনাফার পাশাপাশি নানা প্রতারণা গরুর মাংসের শক্তিশালী সিন্ডিকেট

সিটিভি নিউজ।।    নেকবর হোসেন  কুমিল্লা প্রতিনিধি=========
কুমিল্লার বেশির ভাগ বাজারে প্রতিদিনের গরুর মাংসের চাহিদা পূরণ করছে ভারত থেকে আসা চোরাই গরু। কুমিল্লা নগরীর মাংসের বিশাল চাহিদাও পূরণ করছে এই গরু। ব্যবসায়ীরা চোরাই পথে আসা গরু অল্প মূল্যে বিনতে পারলেও মাংসের দাম কমাচ্ছে না। উলটে অধিক মুনাফার আশায় দ্বিগুণ দামে মাংস বিক্রি করছে। এছাড়া মাংস বিক্রির সময় ক্রেতাদের সঙ্গে নানা প্রতারণারও আশ্রয় নিচ্ছে তারা। এ নিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, কুমিল্লায় মাংস বিক্রেতাদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটের নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক শেল্টার। চক্রের সদস্যরা সরকারি নিয়মকানুন এবং ভোক্তা অধিকারের কোনো বিষয়ই মানছে না। কৃষি বিভাগ থেকে গরুর মাংসের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তা আমলে নিচ্ছে না বিক্রেতারা। কেজিতে ১৩৫ টাকা ৬১ পয়সা বেশি নিচ্ছে তারা। সোমবার নগরীর রানীর বাজার, বাদশা মিয়ার বাজার, রাজগঞ্জ ও নিউ মার্কেটে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হয় ৮০০ টাকা। আবার এক কেজি মাংসের মধ্যে অন্তত ২৫০ গ্রাম হাড় ও চর্বি দেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো গ্রাহককে চালাকি করে আরও বেশি হাড়-চর্বি দিয়ে দিচ্ছে। বেশি প্রতারণার শিকার হচ্ছে নারী ক্রেতারা।

বাজারে রাজগঞ্জ বাজারে গরুর মাংস কিনতে আসা মোরশেদা আক্তার জানান, ৮০০ টাকা কেজিতে খরিদ করেও ভালো মাংস পাননি তিনি। জোরপূর্বক তাকে অতিরিক্ত হাড় ও চর্বি ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শত অনুরোধেও পাত্তা দেয় না বিক্রেতারা। আরেক ক্রেতা আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘কেজিতে ২০০ গ্রাম হাড় দেওয়ার কথা বলে ৩-৪শ গ্রাম হাড় এবং চর্বি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ এক কেজি মাংস খরিদ করলে তাতে খাবারযোগ্য আধা কেজি হাড়-চর্বি থাকছে। এ নিয়ে কথা বললে উলটো অপমান-অপদস্ত হতে হয়। তিনি আরও বলেন, ‘তারা নামে যেমন কসাই, কাজেও কসাইয়ের পরিচয় দিচ্ছে। আল্লাহ ছাড়া এদের বিচার করার কেউ নেই।’
ভোক্তাদের দাবি, খলিল ও নয়ন মিয়া যদি সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কমে মাংস বিক্রি করতে পারে তাহলে চোরাইপথে গরু এনে কুমিল্লার ব্যবসায়ীরা কেন কম দামে বিক্রি করতে পারবে না? প্রশাসন এ বিষয়ে গুরুত্ব দিলে সরকারি দামেই মাংস বিক্রি সম্ভব। জানতে চাইলি নিউ মার্কেট বাজারের মাংস ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, ‘গরু কিনতে হয় বেশি দামে। সরকারের উচিত সার্বিক বাজার বিবেচনা করে পুনরায় মাংসের মূল্য নির্ধারণ করা। কারণ প্রতিনিয়ত ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।’ কুমিল্লা মহানগর মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাফর মিয়া বলেন, ‘৮০০ টাকায় বিক্রি করলেও লোকসান গুনতে হয়। এরপরও আমরা ব্যবসা চালিয়ে নিচ্ছি। সরকার নির্ধারিত ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সায় কোনোভাবেই মাংস বিক্রি করা সম্ভব নয়।’
একাধিক সূত্র জানায়, কুমিল্লায় চোরাইপথে আসা গরু এবং মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ক্রেতার পকেট কাটছে। খুচরা বিক্রেতাদের সিন্ডিকেটের কাছ থেকে মাংস কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে খুচরা বিক্রেতারা নগদ অর্থ ছাড়াই বাকিতে মাংস নিয়ে বিক্রি করে অর্থ পরিশোধ করতে পারছে। অর্থাৎ এতে খুচরা বিক্রেতারা বেশি লাভ না পেলেও মোটা অঙ্কের লাভ পাচ্ছে সিন্ডিকেট সদস্যরা। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর নির্ধারিত নতুন মূল্য তালিকা বাস্তবায়ন করতে আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে কুমিল্লায় এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৫ মার্চ কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ২৯ পণ্যের মূল্য তালিকা নির্ধারণ করে। যার মধ্যে গরুর মাংসের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা।

সংবাদ প্রকাশঃ ২৬০৩২০২৪ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like>  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ