কচুয়ায় খাল পূন: খননের ফলে স্বপ্ন দেখছে হাজারও কৃষক

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ।।     মোঃ জুয়েল রানা,কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: চাঁদপুরের কচুয়ায় একটি জোড়া খাল পূন:খননের ফলে স্বপ্ন দেখছে হাজারও কৃষক। অতীতে জমি থেকে ধান কেটে বাড়িতে নিয়ে আসা বিড়ম্বনা সৃষ্টি ও রোপণের পর পরিচর্যার জন্য দিনের পর দিন বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা কিংবা জমিতে জলাবদ্ধতা হলেও এবার আর সেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।

পূন:খাল খননে জমির জন্য সহজেই পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও নতুন রাস্তা তৈরি হওয়ায় খুশি এখানকার কৃষকরা।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে উপজেলার বিতারা ইউনিয়নের প্রায় ২.৫ কি.মি. খালটি পূন:খননের কাজ করা হয়। এতে খাল খননে প্রাণ ফিরে পেয়েছে জোড়া খালটি। দীর্ঘ ৫০ বছরেও জোড়া খালটি খনন না হওয়ায় সেচ কাজে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে অনেক কৃষকের।
কুমিল্লা,চাঁদপুর,ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের (বিএডিসি) আওতায় খাল খননে হাসি ফুটেছে প্রায় ৫০০ একর জমির চার মাঠের প্রায় এক হাজার কৃষকের।
উপজেলার বিতারা ইউনিয়নের বাতাপুকুরিয়া,বুধুন্ডা,চাঁনপাড়া ও হরিপুর গ্রামের হাজার কৃষকের হাজার হাজার বিঘা জমি চাষ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। জমিতে পানি দেয়ার বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না থাকায় তাদের অনেক কষ্ট হতো। বৃষ্টি এলে বৈশাখ মাসে তাদের কষ্টার্জিত ফসল কেটে বাড়িতে নিয়ে আসতে অনেক বেগ পেতে হতো।
কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধীনে (বিএডিসি) একটি প্রকল্পের মাধ্যমে জোড়া খালটি পূন:খনন করে। খাল খননের পর কৃষকের জমির পানির সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি একটি নতুন রাস্তা তৈরি হয়। যা রাস্তা দিয়ে বাতাপুকুরিয়া,বিতারা থেকে সহজেই কৃষকরা তাদের জমির ধান নিয়ে আসতে পারবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখন আর জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না। খাল থেকে পানি সেচের ব্যবস্থা রয়েছে। খাল খননের সুবিধায় খালে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে কৃষকেরা সহজেই জমিতে পানি দিতে পারছে।
অপরদিকে নতুন মাটির রাস্তা তৈরি হওয়াতে আগামী বৈশাখ মাসে জমি থেকে ধান কেটে সহজেই কৃষকরা বাড়িতে কিংবা গোলায় নিয়ে আসতে পারবে বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
বুধুন্ডা গ্রামের কৃষক ও ইউপি সদস্য আব্দুর বারেক জানান, মাঠে জলাবদ্ধতার কারনে বোরো,শস্য অনেক ফসল নষ্ট হতো। চারদিকে পানি নিষ্কানের ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকরা ভোগান্তিতে পড়ছে হয়েছে। এই প্রকল্পে আমাদের একসঙ্গে দুটি কাজ হয়েছে। একদিকে খাল খনন অপরদিকে নতুন রাস্তা নির্মাণ। আগে জমি থেকে ধান শ্রমিকের মাধ্যমে কাঁধে করে নিয়ে আসতে হতো। এখন আমরা ছোট যানবাহনের মাধ্যমে নিয়ে আসতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন ৫০০ একর জমির মধ্যে প্রায় ৪শ একর জমিতে স্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি দেয়া যাবে। প্রকল্পটিতে আমাদের অনেক উপহার হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক হারুন,বিল্লাল মিয়া জানান, প্রায় ৫০ বছর ধরে এই জমিতে জলাবদ্ধতা থাকার কারনে অনেক ফসলি জমিত নষ্ট হয়েছে। ফলে অনেক রবি,বোরো শস্য নষ্ট হয়। জলাদ্ধতার কারনে প্রায় ৩ থেকে ৪ একর জমির ফসল নষ্ট হতো। জোলা খাল খনন প্রকল্পের কারণে এখন আর জমিতে পানির অভাব হবে না। খাল খনন ও রাস্তা তৈরি হওয়ায় দুটি গ্রামের ব্যাপক সুবিধা হয়েছে।
কুমিল্লা,চাঁদপুর,ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প (বিএডিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী নুর মোহাম্মদ বলেন, এ মাঠে কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে পানি জলাবদ্ধতার কারনে ভোগান্তি পড়তে হতো। বর্ষা মৌসমে পানি কোনো দিকে না যাওয়ায় জলাবদ্ধাতা সৃষ্টি হয়। ফলে জোড়া খাল খননে পানি সেচে কৃষকদের সুবিধা বেশি হবে। পাশাপাশি কৃষকদের ফলন বৃদ্ধি পাবে এবং তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
উপজেলা বিএডিসি কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে জোড়া খালের পূন:খনন প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত বিতারা ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের কৃষকদের মাঠের ফসল নিয়ে আসতে পারতো না। প্রকল্পের মাধ্যমে ২.৫ কি. মিটার খাল খনন করা হয়েছে। এখান থেকেই জমিতে পানি দিতে পারবে। কোন সমস্যা হবে না। গত বছর পানি সেচের অভাবে অনেক কৃষকের ফসল কম হয়েছে।সংবাদ প্রকাশঃ  ১২-০৩-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে/লিংকে ক্লিক করুন=  

Print Friendly, PDF & Email