অন্ধকারে আলোর ঝিলিক; আনন্দের বণ্যা ৪ পরিবারে

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ।।  এ বিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ সংবাদদাতা জানান ===
অন্ধকারে বৈদ্যুতিক বাতির আলোর ঝিলিকে আনন্দে ভাসছে ৪ পরিবার। আধুনিক যুগেও ওই পরিবারগুলো সেকেলে কুপি বাতির উপর নির্ভর ছিল যুগ যুগ ধরে। হতদরিদ্র এ পরিবারগুলো স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের প্রতিবন্ধকতাসহ নানা জটিলতায় আবেদনের ৫ বছরেও বৈদ্যুতিক আলোর মুখ দেখেননি।
অবশেষে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্টমিডিয়ায় সংবাদটি প্রকাশের পর গত সোমবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় বৈদ্যুতিক বাতির আলোয় আলোকিত হলো ৪ পরিবার।
বিদ্যুৎ কর্মীরা যখন ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছিলেন, তখনও অন্ধকার ছিল। কুপিবাতি এবং মোবাইল টর্চের আলোয় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করতে হয়। বিদ্যুতের আলো জ¦লে উঠতেই ৪ পরিবারের ১৭ সদস্যের চোখে- মুখে কাঙ্খীত এক অনাবিল আনন্দের ঝিলিকের দেখা মিলে।
প্রায় ৩২ বছর পুর্বে ওই বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন বাবরি মিয়া। তখন থেকেই ওই বাড়ির চারপাশের লোকজন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত ছিল, ভোগ করছেন আধুনিক সব সুবিধা, তখন বাবরী মিয়ার বাড়ি ডুবে আছে অন্ধকারে, বিদ্যুৎহীন মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে তাদের। ৪ পরিবারের ১৭ জন অধিবাসীর ৮ শিক্ষার্থীর লেখা-পড়া চলতো কুপিবাতি আর হারিকেনের মিটি মিটি আলোয়। প্রচন্ড গরমে হাতপাখা পেলেও ইন্টারন্যাটসহ অধুনিক যুগের সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত ছিল এ সকল পৌর নাগরিক।
বিদ্যুতের আলোয় দাড়িয়ে বাড়ির কর্তা অশিতিপর বৃদ্ধ বাবরি মিয়া জানান, আমার জন্ম থেকেই কুপি বাতির উপর নির্ভর ছিলাম, সন্তানেরা বড় হয়ে হারিকেন এবং মোমের আলো যুক্ত করেছে। ১৯৯০ সাল থেকেই আমার বাড়ির চতুরপার্শে¦ বিদ্যুৎ ছিল, আর্থিক সংকটের কারনে বিদ্যুৎ সংযোগ আনতে পারিনি। ছেলে মেয়েরা বড় হওয়ার পর ২০১৭সালে বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন করলে অনুমতি পাওয়ার পরও প্রতিবেশী প্রভাবশালী হুমায়ুন কবির’র জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরধরে বাঁধার সৃষ্টি করেন। সামাজিক সালিস, উপজেলা প্রশাসন, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা, থানা পুলিশের নিকট আবেদন করেও সমাধান পাইনি। অবশেষে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছি। এখন থেকে আর কুপি বাতির উপর ভরসা করতে হবে না।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (কুমিল্লা) চান্দিনা-১’র দেবীদ্বার জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী শ্রী দিপক কুমার সিংহ বলেন, এলাকায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পোনরা বাবরি মিয়ার বাড়ির ৪ পরিবার বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। প্রায় চার দফা এজিএম, ঠিকাদার, পুলিশসহ বিপুল জনবল নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল। কর্তব্যকাজে বাঁধাদানের অভিযোগে আমি নিজে বাদী হয়ে হুমায়ুন কবিরসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করেছিলাম। বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদটি প্রকাশের পর ভ্রাম্যমান আদালতের সহযোগীতায় ওরা বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে।
ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও দেবীদ্বার উপজেলা সহকারী কমিশনার মোঃ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ভালো কাজ করতে পারলে আনন্দ পাই। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ঘোষনায় বিদ্যুৎ বিহীন কোন পরিবার থাকার কথা নয়। দেবীদ্বার পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ বিহীন ৪ পরিবারের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রচারের কারনে আমাদের নজরে আসে। জমি সংক্রান্ত যে বিষয়টি নিয়ে বিরোধ ছিল সেটি আদালতের, বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট ছিলনা। তাই বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সমস্যা হয়নি।  সংবাদ প্রকাশঃ  ১-০-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে/লিংকে ক্লিক করুন=  

Print Friendly, PDF & Email