অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে

সিটিভি  নিউজ।।   মোঃ আবদুল আউয়াল সরকার:  সংবাদদাতা জানান ===
অফিসের কাজ করতে, ক্লাস করতে অথবা অলস সময় পার করতেও এখন মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে অনেকগুণ।
বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় পরিজন, ভালোবাসার মানুষ সকলের সঙ্গে ফোনে কথা চলে ঘড়ির কাঁটা না মেপেই।মোবাইল ফোন থেকে নির্গত হওয়া রেডিওফ্রিকোইয়েন্সি রক্তচাপ বাড়িতে তোলে। বেশি সময় মোবাইল ফোনে কথা বললে ব্রেনের উপর তার খারাপ প্রভাব পড়ে। দশ বছর ধরে মোবাইল ব্যবহার করলে মস্তিষ্ক কোষের অস্বাভাবিক রকমের বৃ‌দ্ধি হতে পারে। যা থেকে পরবর্তীকালে গ্লাইওমা (সব থেকে পরিচিত ব্রেন টিউমার) ও ব্রেন ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে।
অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে অনেক সময় আঙুল আর কব্জিতে ব্যথা অনুভব হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এতই ব্যথা হতে পারে যে, একটা চামচ ধরতেও কষ্ট হয়।
মোবাইল ব্যবহার থেকে এমন সমস্যা নিয়ে অনেকে চিকিৎসকের দারস্থও হন। ‘মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে অনেক ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। বহু মানুষ বিভিন্ন ভঙ্গিতে বসে মোবাইল ব্যবহার করেন। ফলে পিঠ-কোমরেও বহু সময়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে হাতের। একনাগারে মোবাইল ব্যবহার করার ফলে পেশিতে টান পড়ে। রক্ত চলাচলের গতিও কমে। ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা বেদনার সূত্রপাত’।
মোবাইল ব্যবহারের সময় ঘাড় নিচু করে ব্যবহার করা ঠিক নয়। টেবিলে চোখের সোজাসুজি রেখে মোবাইল ব্যবহার করলে ভালো হয়।
 ‘দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মোবাইলে টেক্সট লিখলে টেক্সট ক্ল এবং সেলফোন এলবো নামে আঙুল ও কব্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডাক্তারি পরিভাষায় এ সমস্যার নাম কিউবিটাল টানেল সিনড্রোম বলে।
অনবরত টেক্সট লিখলে বুড়ো আঙুল, তর্জনী এবং মধ্যমা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যবহার হয়। ফলে আঙুল দুটির কাছাকাছি থাকা স্নায়ুর ওপরে বাড়তি চাপ পড়ে। এর জেরে প্রথমে আঙুল অসাড় লাগে। পরের দিকে ব্যথা হয়। এর থেকে রেহাই পেতে আঙুল স্ট্রেচ করতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক।হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে সমস্যা হিসেবে জানান,  ‘একটানা মোবাইলে কথা বলার কারণে ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যথার সঙ্গে মাইগ্রেনের মাথাব্যথার ঝুঁকি বাড়ে। টাচ ফোনে একটানা মেসেজ করার কারণে বেশি বয়সে হাতের কব্জি ও আঙুলে ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি। দিনরাত মোবাইল সঙ্গে রাখেন এমনকি বাথরুমে ও ঘুমানোর সময়েও মোবাইল সঙ্গে নিয়ে যান তাদের পেশি ও স্নায়ুতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এতে স্ট্রেন ইনজ্যুরির ঝুঁকি বাড়ে।  অর্থাৎ যখন-তখন তীব্র ব্যথায় কষ্ট পেতে হতে পারে।
মোবাইল ফোনের ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ডের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির প্রধান লক্ষ্য মস্তিষ্ক কোষ। মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্ল্যান্ডের পাশাপাশি থাইরয়েড গ্ল্যান্ড, স্টেম সেল, ত্বক, মুখ, প্যারোটিড গ্ল্যান্ড, রক্ত কোষ, লিম্ফ নোড, স্তন, চোখেও ক্যানসার হতে পারে।
অত্যধিক মোবাইলের ব্যবহারে শুক্রাণুর ক্ষতি, পুরুষের বন্ধ্যাত্ব, মহিলাদের গর্ভপাতের সম্ভাবনা বাড়ে। শিশুদের ক্যানসার, ঘুমের সমস্যা, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, আত্মহত্যার প্রবণতা, হৃদ্‌রোগ, শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যাওয়া, আর্থরাইটিস, শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া ও ত্বকের সমস্যাও হতে পারে। প্রভাব পড়ে ক্রোমোজোমের উপর। যার ফলে প্রজননের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশন সিঙ্গেল ও ডাবল-স্ট্র্যন্ড ডিএনএকে ভেঙে দেয়। এছাড়াও মোবাইলের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আমাদের নার্ভাস সিস্টেমের উপর এমন ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে যার ফলে স্নায়ুতন্ত্রে পরিবর্তনের পাশাপাশি কোষের মৃত্যু ঘটে। অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত কোষ ক্যান্সারের কারণও হয়।
এসব সমস্যা প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হলো মোবাইল ফোন ব্যবাহার কমানো।

লেখক:চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদ,শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মী।সংবাদ প্রকাশঃ ০৭১০২০২৩ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like>  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ