নারায়ণগঞ্জে ৮২ মসজিদের নামে ইউএনও’র ডাবল চেক ইস্যু!

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় মসজিদের ঈমাম-মোয়াজ্জেমদের জন্য সরকারি বরাদ্দের টাকা বন্টনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে। ওই উপজেলায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের তালিকা ভুক্ত ৫৯৭টি মসজিদ রয়েছে। যার মধ্যে ৮২টি মসজিদের নামে ডাবল চেক ইস্যু করেন ইউএনও সাইদুল ইসলাম। বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে উপজেলা প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, উপজেলার যে ৫৯৭টি মসজিদের তালিকা করা হয়েছে তার বাইরেও আরও অনেক মসজিদ রয়েছে। সেগুলো তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কিন্তু ৮২টি মসজিদের নামে ডাবল চেক ইস্যুর বিষয়টি কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কারণ ভুল হলে একটি-দু’টির ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে। ভুলের সংখ্যা কোন ভাবেই এত বেশি হতে পারে না। এছাড়াও ইউএনও’র বিরুদ্ধে উত্থাপিত হওয়া আরও বেশ কিছু অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদক ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা সংক্রমনের কারণে সারাদেশের মসজিদের ঈমাম ও মোয়াজ্জেমদের সহযোগিতার জন্য প্রত্যেক মসজিদের নামে ৫ হাজার করে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এই টাকা থেকে ঈমাম ৩ হাজার এবং মোয়াজ্জেম ২ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। সোনারগাঁও উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নে মোট ৫৯৭টি মসজিদের তালিকা তৈরী করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার আনোয়ারা বেগম। তিনি ওই তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন। যাচাই বাছাই শেষে ওই তালিকা চূড়ান্ত করা হলে ৫৯৭টি মসজিদের জন্য মোট ২৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ইউএনওর সরকারি ব্যাংক হিসাবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এদিকে ইউএনও সরকারি এই অনুদানের টাকা বরাদ্দ দেওয়ার সময় রহস্যজনক ভাবে ৮২টি মসজিদের নামে দু’টি করে চেক ইস্যু করেন। বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে উপজেলা প্রশাসনে তোলপাড়া শুরু হয়। বিষয়টি ইউএনও’র ইচ্ছাকৃত, নাকি ভুল তা নিয়েও শুরু হয় সমালোচনা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সোনারগাঁও উপজেলার ফিল্ড সুপারভাইজার আনোয়ারা বেগম বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে মসজিদের তালিকা করে তা যাচাই বাছাইয়ের জন্য ইউএনওর কাছে হস্তান্তর করা হয়। ইউএনও চুড়ান্ত করে সেই তালিকা ইসলামিক ফাউন্ডেশনে প্রেরণ করেন। এরপর ইসলামিক ফাউন্ডেশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি ব্যাংক হিসাবে টাকা প্রদান করেন। চেক আকারে সেই টাকা তালিকা ভুক্ত মসজিদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ৮২টি মসজিদের নামে কিভাবে ডাবল চেক ইস্যু হলো সেটি ইউএনও স্যার বলতে পারবেন। আমার তালিকায় একই মসজিদের নাম দুই বার করে আসেনি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমাম-মোয়াজ্জেমদের নামে যে টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন তা ইউএনওদের ব্যাংক একাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে ইউএনওরা সেই টাকা তালিকা অনুযায়ী মসজিদের নামে চেক ইস্যু করে প্রদান করেন।
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ভুলবশত ৮২টি মসজিদের নামে দুটি করে চেক ইস্যু করা হয়েছিল। বিষয়টি নজরে আসার পর ওই ৮২টি মসজিদের একটি করে চেক বাতিল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁয়ের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, উপজেলা ৫৯৭টি মসজিদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করেন ইউএনও। কিন্তু তারপরেও অনেক এলাকার অনেক মসজিদের নাম তালিকায় আসেনি। উপজেলার অনেক মসজিদের নাম বাদ পড়লেও তালিকায় থাকা ৮২টি মসজিদের নামে দুইবার করে টাকা বরাদ্দের বিষয়টি অবশ্যই একটি অনিয়ম বা দুর্নীতি।

সংবাদ প্রকাশঃ  ১২২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=

Print Friendly, PDF & Email