নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : ‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়’। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে কৌশলে পাশ কাটিয়ে জেলা বিএনপির বিবৃতি দিলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদের পিএস। নাম রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ। এই বিবৃতি ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। বিবৃতিটি খুবই সাদামাটা।
তৈমূর আলম খন্দকারের দেয়া বিবৃতিতে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে হামলার ব্যবসায়ী নেতা সহ অন্যদের নাম উল্লেখ করা হলেও রিয়াজুলের বিবৃতিতে কারো কোন নাম নেই। ঘটনা এমনভাবে বিবৃত করা হয়েছে যে, কে বা কারা এসে যেন সবকিছু লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে। বিবৃতিদাতা রিয়াজুল জেলা বিএনপির সদস্য হয়ে আহবায়ককে উপেক্ষা করে বিবৃতি দেয়ার ক্ষমতা কোথায় পেল, কার থেকে পেল ?। তার খুটির জোর কোথায়?। এ সকল প্রশ্নের উত্তরে বিএনপি নেতারা বলেন, বাঁশের চেয়ে কঞ্চি বড়। রিয়াজুল কঞ্চি।
বিএনপির একাধিক নেতা জানান, যেখানে তৈমূরের বিবৃতি নিয়ে হৈ চৈ সেখানে আবার জেলা বিএনপির প্যাড ব্যবহার করে বিবৃতি দৃষ্টিকটু। এ ধরনের বিবৃতিতে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করা হয়েছে। এর আগেও জেলা বিএনপির সময়ে এ ধরনের কর্মকান্ড হতো। মন চাইলে বিবৃতি দেওয়া হতো না। না চাইলে দেওয়া হতো না।
পর্যবেক্ষক মহলের মতে, বিএনপিতে সব সময়েই নেতৃত্বের মধ্যে শৃঙ্খলা মানা হয় না। ৩০ জানুয়ারী বিবৃতি দিয়েছেন তৈমূর আলম খন্দকার। বিবৃতি দিলেন রিয়াজুল যিনি অধ্যাপক মামুন মাহমুদের পিএস। একজন পিএস কি করে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন। অবশ্য রিয়াজুল জেলা বিএনপির সদস্য বটে। এই পরিচয়েও তিনি বিবৃতি দেয়ার এখতিয়ার রাখেন না।
রিয়াজুলের বিবৃতি
রিয়াজুলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৮ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচন চলাকালীন সময়ে আদালত প্রাঙ্গণে সরকার সমর্থিত আইনজীবীদের মদদে এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের যোগসাজশে ব্যাপক সন্ত্রাসের সৃষ্টি করা হয়। সাংবাদিক এবং বিএনপিপন্থী আইনজীবী সহ সাধারণ আইনজীবীদের উপর হামলা করা হয়, ব্যাপক মারধর করা হয়, এতে সাংবাদিক ও আইনজীবী সহ ২০জন আহত হয়। এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার ও সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ।
৩০শে জানুয়ারী গণমাধ্যমে পাঠানো বার্তায় রিয়াজুল লিখেছে, জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃদ্বয় এই নিন্দা জানান। তারা বলেন, মধ্যরাতের ভোট কারসাজিতে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া এই সরকার জনগনের রায়কে ভয় পায়, তারা জানে সঠিক নির্বাচন হলে ভোটারদের রায় তাদের পক্ষে যাবে না, তাই তারা প্রত্যেকটি নির্বাচনে সহিংসতার রাজত্ব তৈরি করে, নির্বাচনের ফলাফল তাদের পক্ষে নেয়ার জন্য সর্বপ্রকার অসাধু পন্থা অবলম্বন করে। নারায়ণগঞ্জে আইনজীবী পরিষদের নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম ঘটে নাই। নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত ভোট প্রদানে তারা ভীত হয়ে যায়। ভোটারদের মনে ভয় সৃষ্টি করার জন্য বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সহকারে ব্যাপক মহরা চালায়, দিনব্যাপী উস্কানিমূলক শ্লোগান দেয় এবং একপর্যায়ে ভোটার, ও সাংবাদিকদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালায়। আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তৈমূর আলম খন্দকারের বিবৃতি
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে হামলার ঘটনায় গত ৩০ জানুয়ারী বিবৃতি দিয়েছেন। গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে তিনি ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানকে দায়ী করেছেন। তৈমূর বলেছেন, যেহেতু শামীম ওসমানের উপস্থিতিতে তারই অনুগত নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের নেতৃত্বে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের উপর হামলা হয়েছে, সেহেতু শামীম ওসমান এ সন্ত্রাসী ও ন্যাক্কারজনক ঘটনার দায় অস্বীকার করতে পারে না।
তৈমূর আলম খন্দকার আরো বলেন, কাজল একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হয়ে নিজেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের নেতৃত্ব দিয়ে নারায়ণগঞ্জের সম্মানিত ব্যবসায়িক সমাজের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।
তৈমূর আলম খন্দকার বলেন যে, ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির (ভূতপূর্ব নারায়ণগঞ্জ মহকুমা আইনজীবী সমিতি) শত বৎসরের নির্বাচনের ইতিহাসে এটাই প্রথম আইনজীবীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা। আইনজীবী ভবনে সন্ত্রাসীদের হামলা নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসে একটি ন্যাঙ্কারজনক ঘটনা।
তৈমূর আলম খন্দকার এই সন্ত্রাসী হামলা সম্পর্কে আরো বলেন যে, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আইনজীবী ও সাংবাদিকদের (তাদের কার্যালয়ে সংলগ্ন আইনজীবী ভবনে) নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়ে আবারো প্রমাণ করলেন যে, তারা নারায়ণগঞ্জের জনগণের ডিসি ও এসপি নহেন বরং ন্যাঙ্কারজনকভাবে সরকারী দলের পারপাস সার্ভ করছেন। আদালত প্রাঙ্গনে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের নিরাপত্তা চেয়ে পূর্বেই ডিসি ও এসপির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। তারা নিরাপত্তা বিধানের কথা দিয়েও কথা রাখেন নাই।
তৈমূর আলম খন্দকার দুঃখের সাথে আরো বলেন যে, বার ভবনে সন্ত্রাসী হামলায় আমরা কোথাও বিচার চাইবো না কারণ কোথাও বিচার পাওয়া যাবে না। বিরোধী দলের উপর যে স্টিমরোলার চলছে তাহা পুলিশ ও প্রশাসনের জ্ঞাতসারেই হচ্ছে। বিরোধী দলের উপর যখন সন্ত্রাসী হামলা হয় তখন চোখ কান বন্ধ রাখাই বর্তমানে পুলিশ ও প্রশাসনের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। তবে বিষয়টি ইতিহাসের পাতায় একটি জঘন্য ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে থাকবে বলে মনে করছি।
যেহেতু সরকারী দলের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিচার পাওয়া যায় না সেহেতু আহত আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের ধৈর্য্য ধারণ করার জন্য অনুরোধ জানান। সন্ত্রাসের পতন একদিন হবেই হবে এবং এটাই ইতিহাসের স্বাক্ষ্য।

সংবাদ প্রকাশঃ  ২২০২১ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

Print Friendly, PDF & Email