পিবিআই’র তদন্তে বেরিয়ে এলো আড়াইহাজারের ফাতেমা হত্যার রহস্য

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ, এম আর কামাল, নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান : নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় শ্¦াসরোধে হত্যার পর বালিচাপা দিয়ে রাখা ফাতেমা আক্তার (২৪) এর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই ঘটনায় নিহতের প্রেমিকা ইউনুছকে গ্রেপ্তারের পর ফাতেমা হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়। গ্রেপ্তারের পর ঘাতক ইউনুছ ফাতেমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। মূলত স্বামী পরিত্যক্তা ফাতেমার সঙ্গে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের কথা গোপন করতেই তাকে হত্যার পর লাশ প্রতিবেশি ডালিমের নির্মাণাধীন ঘরের মেঝেতে বালিচাপা দিয়ে রাখে ইউনুছ। গতকাল শনিবার দুপুরে পিবিআই নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফাতেমা হত্যার রহস্য উন্মোচনের কথা জানান পিবিআই নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম।
মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের কাছ থেকে মামলার তদন্ত ভার গ্রহণের মাত্র ৪৩ দিনের মধ্যে পিবিআই এই হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচনে সক্ষম হয়েছে। গত ১৫ আগষ্ট আড়াইহাজারের ডেংপাড়া এলাকার জনৈক ডালিমের নির্মাণাধীন বাড়ির মেঝের বালু খুঁড়ে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে ফাতেমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৬ আগষ্ট আড়াইহাজার থানার এসআই মুক্তার হোসেন বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২৯ অক্টোবর মামলাটি তদন্তর দায়িত্ব পায় পিবিআই।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্ত থেকে ভারতে পালিয়ে যাবার সময় ফাতেমা হত্যা মামলার সন্দিগ্ধ আসামী তারই প্রতিবেশি ও প্রেমিক ইউনুছকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ফাতেমা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গত ১০ ডিসেম্বর ইউনুছ নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
ফাতেমা হত্যার বিষয়ে ইউনুছ তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করে, স্বামী পরিত্যক্তা ফাতেমার বাড়ি আড়াইহাজারের মাহমুদপুর ইউনিয়নের গহরদি গ্রামে হলেও সে মানিকপুরে মামা ইলিয়াছের বাড়িতে বসবাস করতো। ইউনুস ছিল ফাতেমার মামা ইলিয়াছের প্রতিবেশি। অবিবাহিত ইউনুছ ৯ বছর মালয়েশিয়া প্রবাস থেকে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে ফেরে। প্রতিবেশি হওয়ার সুবাদে ইউনুছের যাতায়াত ছিল ইলিয়াছের বাসায়। তখন ফাতেমার সঙ্গে ইউনুছের পরিচয় ও প্রেম গড়ে উঠে। ওই সময় ফাতেমার নানা নানী ইউনুছকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এরই মধ্যে ইউনুছ নতুন বাড়ি করে ডেংপাড়ায় চলে যায়। তবে মানিকপুরের পুরাতন বাড়িতে ইউনুছের যাতায়াত ছিল এবং সেখানেই ফাতেমার সঙ্গে ইউনুছ শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। তাদের এই সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়ে গেলে ইউনুছের পরিবার তার জন্য পাত্রী দেখা শুরু করে। একই সময় ফাতেমা ইউনুছকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করে।
অপরদিকে ফাতেমার সঙ্গ ছাড়তে পরিবারের চাপ, অপর দিকে বিয়ের জন্য ফাতেমার চাপ-ইউনুছকে ভাবিয়ে তোলে। ইউনুছ সিদ্ধান্ত নেয় ফাতেমাকে হত্যার। পরিকল্পনা মতো গত ১০ আগষ্ট ইউনুছ টেলিফোন করে ফাতেমাকে বাসা থেকে নিয়ে যায। এরপর সারাদিন তারা বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে। রাতে ইউনুছ ফাতেমাকে নিয়ে তাদের নতুন বাড়ির পেছনে থাকা বাগানে যায়। সেখানে ফাতেমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক শেষে ফাতেমাকে পেছন থেকে গলা পেঁচিয়ে ধরে শ^াসরোধে হত্যা করে। এরপর লাশ প্রতিবেশি ডালিমের নির্মাণাধীন বাড়ির মেঝেতে বালিচাপা দিয়ে রাখে। গত ১৫ আগস্ট ডালিম তার নির্মাণাধীন ঘরের মেঝে পাকা করার সময় সেখান থেকে দুগর্ন্ধ পেয়ে পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করে। পরে পুলিশ মেঝের বালি খুঁড়ে সেখানে পঁচন ধরা ফাতেমার লাশ উদ্ধার করে।

সংবাদ প্রকাশঃ  ১২১২২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

Print Friendly, PDF & Email