হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে কুমিল্লার মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন অব্যাহত

সিটিভি নিউজ।।     সৈয়দ আহসান হাবীব পাখি  কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান ==
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ৬নং সেনেরচর-চালিভাঙা মোৗজা ও নারায়নগঞ্জের সোনাগাঁও-আড়াইহাজার উপজেলার আওতাধীন মেঘনা নদীর চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের ১নং সাপমারা চরেরগাও মৌজার অভ্যন্তরে বালু উত্তোলন না করার জন্য ২০ অক্টোবর মহামান্য হাইকোর্টের বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে বেঞ্চ রুল জারি করেছে। মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকলেও তা অমান্য করে লতিফ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ পেয়ে মেঘনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একাধিকবার অভিযান চালিয়েছেন। বালু উত্তোলনকারীরা ভ্রাম্যমান আদালতের খবর পেলে তারা স্থান পরিবর্তন করে ওই পাড়ে চলে যায়। গত ৩০ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলনকারী ৬ জনকে কারাদন্ড প্রদান করেন।
স্থানীয় সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের ৬নং সেনেরচর ও সাপমারা চরেরগাও এবং ভাষানিয়া দরিচর নামে চারটি বালু মহল রয়েছে। কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ১৪২৭ বাংলা সনের (এক বছরের জন্য) ভূইয়া ট্রেডার্স ও নার্গিস ট্রেডার্স নামে পৃথক প্রতিষ্ঠানকে দু’টি বালু মহাল ইজারা দেয়। ইজারদাররা দিনের বেলা নির্দিষ্ট এলাকায় বালু উত্তোলন করলেও রাতে গ্রাম এবং ফসলি জমির কাছাকাছি এসে বালু উত্তোলন করে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ফলে মেঘনা নদীর তীরে স্থাপিত বাড়ি-ঘরসহ নানা স্থাপনা ভাঙনের কবলে পড়ে। বসতভিটে হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার। নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার্থে ভূইয়া ট্রেডার্স ও নার্গিস ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর নুরুল আমিন, লতিফ চেয়ারম্যানসহ ভূমিদসূদের বিরুদ্ধে দফায় দফায় মানববন্ধন, ঝারু মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় লোকজন। ভূক্তভোগীরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন-নিবেদন করে আসছেও বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত ঘটনাস্থলে গেলে বালু উত্তোলনকারীরা স্থান পরিবর্তন করে ওই পাড়ে চলে যায়। তারা ভ্রাম্যমান আদালতের খবর আগেই পেয়ে যান। পরে তারা মেঘনা উপজেলা থেকে অন্য স্থানে গিয়ে বালু উত্তোলন করে।
এর আগে ২০১৭ সালের ৯ এপ্রিল রামপ্রসাদচর গ্রামের জনৈক মহসীন নামে এক ব্যক্তি বালু উত্তোলন বন্ধে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন করলে ১১ এপ্রিল শুনানীতে মাননীয় হাইকোর্ট বালু উত্তোলন না করার জন্য ওই সময় স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু বালুদস্যু সিন্ডিকেট হাইকোর্টের নির্দেশের তোয়াক্কা না করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখে। এরপর ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আবার হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন মহসীন। মাননীয় হাইকোর্ট গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২টি ইজারা বাতিলসহ আশপাশের এলকায় বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দেন। সর্বশেষ এ নিয়ে চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির গং বালু কাটা বন্ধের আবেদন করেন হাইকোর্টে। চলতি বছর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর আদালত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নার্গিস ট্রেডার্সকে বালু উত্তোলন না করার জন্য স্থগিতাদেশ দেন। মাননীয় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী ”বালুদস্যু সিন্ডিকেট” বালু উত্তোলন অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। ফলে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প ইকোনোমিক জোন, স্থানীয় বাজার, মসজিদ ও গ্রামের পর গ্রাম মেঘনা নদী ভাঙ্গনের আতঙ্কে এলকার মানুষ দিনযাপন করছে। নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষার্থে স্থানীয় লোকজন দফায় দফায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন-নিবেদন করে আসছে।
মেঘনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রবীর কুমার রায় বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার পর একাধিকবার ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে গেলে বালু উত্তোলনকারীরা এ পাড় থেকে ওপাড়ে চলে যায়। গত ৩০ অক্টোবর অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে ১ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
মেঘনা থানার ওসি আব্দুল মজিদ বলেন- বিষয়টি আমার জানা থাকলেও আমি কিছুই করতে পারবো না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাজ।   সংবাদ প্রকাশঃ  ০২১১২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ