তিতাসের মাছিমপুরে তীব্র গ্যাস সংকটঃ রয়েছে কয়েকশ অবৈধ সংযোগ, নির্বিকার কর্তৃপক্ষ   

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি নিউজ।।    হালিম সৈকত,  কুমিল্লা।।  কুমিল্লার তিতাসের মাছিমপুরে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সংযোগের কিছুদিন পর থেকেই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। গ্যাসের পুরোপুরি ব্যবহার করতে না পারলেও মাস শেষে ৯৭৫ টাকা বিল পেমেন্ট করতে হচ্ছে ।  তা কিন্তু মাফ হয় না। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে এলপি গ্যাসও কিনেছেন। এই দিকে অবৈধ গ্যাসের ছড়াছড়ি তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মাথাব্যথা নেই। পুরো তিতাসেই রয়েছে কয়েক হাজার অবৈধ সংযোগ।  কেবল মাছিমপুরেই রয়েছে ১০০-১৫০টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ।  তাদের কারো কাছেই নেই বিলের বই। তাই তারা মাস শেষে বিলও পরিশোধ করতে হয় না। অন্যদিকে যাদের বৈধ সংযোগ রয়েছে তারা নিয়মিত বিল পরিশোধ করলেও পাচ্ছেন না নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস। ফলে যারা অবৈধ সংযোগ চালাচ্ছেন তাদের বিলও পরিশোধ করতে হচ্ছে না কিন্তু যারা মাস শেষে বিল পরিশোধ করছেন,  তাদের সমানই সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন।

সিফাত থাকেন তিতাস উপজেলার মাছিমপুর গ্রামে।

তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে সারাদিন  গ্যাস না থাকায় বাসায় নাস্তা ও রান্নাবান্না  করা যাচ্ছে না। রাত ৮ টায় গ্যাস আসে। ফলে রাতেই রান্না করতে হয়। সন্ধ্যার পর থেকে গ্যাস আসা শুরু হলেও তার চাপ এত কম থাকে যে পানি পর্যন্ত গরম হয় না। ধীরে ধীরে  গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক হয়ে আসে। এরপর শুরু হয় রান্না। পুরো মাছিমপুর জুড়েই বেশ কয়েক বছর ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। তবে গ্যাস সংকটে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন গ্রামের প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দা।  অন্যান্য এলাকায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও শুধু মাছিমপুরেই এই সমস্যা তীব্র   ।

হঠাৎ করেই গ্যাস সংকট বেড়েছে তা কিন্তু নয়,  গ্যাস সংযোগ পাওয়ার পর থেকেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

 শীতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে এই সংকট বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

হাসিনা আক্তার নামে এক গৃহিণী  বলেন, ‘সকাল বেলায় গ্যাস চলে যায়, আসে সেই রাতে। সারাদিনের রান্না সন্ধ্যার পর একসঙ্গে করে রাখি। সকালের নাস্তা বেশিরভাগ দিনই হোটেল থেকে এনে খাই। দুপুরে ফ্রিজে রাখা খাবার ওভেনে গরম করে খাই। ৭/৮  বছর ধরেই এ সমস্যা চলছে।’ প্রতিবছর শীত আসলেই এই সমস্যা বেশি হয় বলে জানান তিনি।

একই অভিযোগ মনোয়ারা বেগমের । তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে ১০ জনের সংসার। একা তিন বেলার রান্না এক বেলায় করা সম্ভব হয় না। তাই সকাল আর দুপুরের খাবারের জন্য আগের দিনের খাবারের উপরই  নির্ভর করতে হয়। রাতে গ্যাস এলে রান্না করেন তিনি। সারাদিন পর রান্না করতে গিয়ে অনেক ভোগান্তিতে পড়েন।

গ্যাস সংকটে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার বয়স্ক ও শিশুরা। গরম পানি করতে না পারায় শীতের সময় কষ্ট পান তারা।

ফজরের নামাজের সময় উঠে রান্না কিংবা নাস্তা তৈরি না করলে সকালের নাস্তা করা হয় না। বিশেষ করে দুপুরের খাবার না খেয়ে থাকতে হয়।

এ বিষয়ে গৌরীপুর গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষ বলেন, ‘শীতের কারণে গ্যাসের চাহিদা প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে যায়। এই বাড়তি চাহিদা মেটানোর মতো গ্যাস নেই। চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস না পাওয়ার কারণে ঘাটতি মেটানো যায় না। রেশনিং করতে হয়। মাছিমপুরের সমস্যা হচ্ছে পাইপ লাইনে সমস্যা। পাইপলাইনের সমস্যার কারণে মাছিমপুরে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্ন ঘটছে। পাইপলাইন পরিষ্কার করা হলে চাপ বেড়ে যাবে এবং গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।    আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি মাছিমপুরের গ্যাস সমস্যার সমাধান টেবিলে নেই।  করোনার পর আশা করি এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

অভিযোগ রয়েছে মাছিমপুর এলাকায় প্রায় ১০০-১৫০ শ’র উপরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে।  এই সকল অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে কিনা তা জণমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে?

সংবাদ প্রকাশঃ  ২৬১০২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

Print Friendly, PDF & Email