মুরাদনগরে ৯ বছর ধরে স্কুল পরিত্যক্ত: হিন্দুদের আখড়ায় চলে পাঠদান হিন্দুদের চলমান

ছবি  ক্যাপশন ঃ (১) রামপুর দক্ষিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের চিত্র, (২) রামপুর দক্ষিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে টিনের ছাপড়ায়।

* ২ বছর খোলা আকাশের নিচে চলে পাঠদান।
* ৭ বছর যাবত হিন্দুদের আখড়ায় চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
* ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী হ্রাস পায়।
* ভবন না থেকেও বার্ষিক শিক্ষা জরিপে উল্লেখ করা হচ্ছে ভবন রয়েছে।
সিটিভি নিউজ।।      মোঃ মোশাররফ হোসেন মনির, মুরাদনগর (কুমিল্লা) সংবাদদাতা ঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের রামপুর (দঃ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝূঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টির এক মাত্র ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করে সিলগালা করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন। ৯টি বছর পেরিয়ে গেলেও কোন ভবন নির্মান না হওয়ায় কোনরকম ভাবে যাযাবরের মতো চালাতে হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। স্থানীয়দের সহযোগীতায় বর্তমানে বিদ্যালয়টির আশ্রয় মিলেছে হিন্দুদের আখড়ায়। নতুন ভবন না হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ভাসমান ভাবে চলায় বর্তমানে ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী কমে যাওয়ায় বিদ্যালয়টি স্থায়ী ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে ফলে ওই এলাকার শিশুরা লোখ-পড়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার ফলে মোট জনসংখ্যার শতভাগ শিক্ষার আওতায় আনার পথে অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, ১৯৪০ সালে স্থানীয় কিছু দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি কক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের অধীনে বিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হয় চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি একতলা ভবন। যা ২০১৩ সালে ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়লে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরিত্যক্ত ঘোষণার পর ৪১৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে খুব বিপাকে পরে যায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে টানা দুই বছর বিদ্যালয়ের পাশে থাকা হিন্দুদের আখড়ায় (সমাধীস্থল) খোলা আকাশের নিচে চলে পাঠদান। ২০১৫ সালে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ওই আখড়ায় টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি দুইটি কক্ষে ৭ বছর ধরে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
এ বিষয়ে রামপুর (দঃ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমিত্রা পাল বলেন, আমি ২০০৭ সালে এই বিদ্যালয়ে যোগদান করি। ২০১৩ সালে পরিত্যক্ত ঘোষনার পর থেকে নতুন ভবনের জন্য বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত যা যা করণীয় আমি তাই করেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা এখনো কোনো ভবন পাইনি। ফলে দিন দিন শিক্ষার্থীর হার কমে যাচ্ছে। ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার সময় যে শিক্ষার্থী ছিল বর্তমানে তার অর্ধেকে দাঁড়িয়েছে। খুব দ্রুত যদি এখানে নতুন ভবন দেয়া না হয়, তাহলে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালানোটাই মুশকিল হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফওজিয়া আকতার জানান, আমাদের দীর্ঘদিনের একটা চাহিদা ছিল এখানে নতুন ভবন করার। কিন্তু আমাদের বিদ্যালয় থেকে যে বার্ষিক জরিপ শুমারি পূরণ করা হয়। না বুঝে আমাদের প্রধান শিক্ষকগণ সেখানে তথ্য দিয়ে আসতেছিলো যে বিদ্যালয়ের ভবন আছে এবং ৪টি শ্রেণী কক্ষ আছে। আর যে শিক্ষার্থী সংখ্যা দেখানো হয়েছে সেই অনুপাতে শ্রেণিকক্ষ যথেষ্ট তাই হয়তো এতোদিন নতুন ভবন আসেনি। এটা মূলত মন্তব্যের কলামে লেখা উচিত ছিল যে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে দীর্ঘ ৯ বছর আগে। তবে আমি যোগদানের পর সেই তথ্যটি পরিবর্তন করে ভবন পরিত্যক্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছি। আশা করি নতুন ভবন আসলে এটি হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলাউদ্দিন ভূইয়া জনী বলেন, ভবন সংকটের কারণে ওই বিদ্যালয় থেকে দিন দিন শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা যেন না কমে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে গেলে প্রথমেই যেটা জরুরি হয়ে পরেছে সেটা হচ্ছে একটি নতুন ভবন।
এখানে খুব দ্রুতই যেন একটি নতুন ভবন দেয়া হয় সেজন্য আমি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করবো।

সংবাদ প্রকাশঃ  ২২-১১-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ