বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মীর হোসেন মিঠুর নেতৃত্বে তৃণমূলে স্বাস্থ্য সেবা

সিটিভি নিউজ।।   গাজী জাহাঙ্গীর আলম জাবির, বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।।====
কুমিল্লা জেলা বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স  ১৯৭৪ সালে ৩১ শয্যার স্থাপনা নিয়ে যাত্রা শুরু করে এই স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান। সময়ের পরিক্রমায় ৩১ শয্যা থেকে বেড়ে বর্তমানে তা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিণত হয়েছে এবং গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা কার্যক্রম শুরু করেছে।
ডা.মো: মীর হোসেন মিঠু বুড়িচং  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর।   যোগদানের পরপরই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার পরিধি এবং সেবার মান বাড়াতে সচেষ্ট হন। বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল চিকিৎসক, নার্স,  মেডিকেল টেক: আয়া, ওয়ার্ডবয়, ক্লিনার, এম্বুলেন্স ড্রাইভার, অফিস স্টাফ সহ সবাইকে নিয়ে ডা: মোঃ মীর হোসেন মিঠুর  নেতৃত্ব  উপজেলার তৃণমূল সাধারণ মানুষদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাভাবিক প্রসব বাড়াতে তিনি নেন বিশেষ উদ্যোগ। ফুল কোর্স এন্টিবায়োটিক, এক মাসের আয়রন ও ক্যালসিয়াম প্রদান করেন। তার এই উদ্যোগ ব্যাপক প্রশংসিত হয়।  ধীরে ধীরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়তে থাকে স্বাভাবিক প্রসবের সংখ্যা। আগে যেখানে ২০-২২ টি স্বাভাবিক প্রসব হতো এখন প্রতি মাসে স্বাভাবিক প্রসব হয় ৫০ টি। গত ১০ মাসে ৪৯০টি স্বাভাবিক প্রসব হয় বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
করোনা মোকাবিলায় কোভিড ভ্যাক্সিনেশন এ বুড়িচং উপজেলা ছিল কুমিল্লা জেলার শুরু থেকে এগিয়ে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তার সঠিক পরিকল্পনা ও দিক নির্দেশনায় বুড়িচং উপজেলার ৮০% জনগণকে কোভিড ভ্যাক্সিন এর ১ম ডোজ দেয়া সম্ভব হয়, ৭০% জনগণকে কোভিড ভ্যাক্সিন এর ২য় ডোজ দেয়া সম্ভব হয় এবং ২৮% জনগণকে কোভিড ভ্যাক্সিন এর ৩য় ডোজ দেয়া সম্ভব হয়।
এছাড়া ১২-১৭ বছর বয়সী ৪২৮১৪
 হাজার শিক্ষার্থীদের ফাইজার ভ্যাক্সিন এর ১ম ও ২য় ডোজ দেয়া হয়।
স্বাভাবিক প্রসব বাড়াতে সিনিয়র স্টাফ নার্স ও মিডওয়াইফদের আগ্রহী করে তুলতে প্রতি মাসে সেরা ৩ জন নার্/মিডওয়াইফ কে সম্মাননা জানানোর উদ্যোগ নেন। তার এই উদ্যোগ স্বাস্থ্যকর্মীদের তুমুল অনুপ্রাণিত করে। সবাই তার কাজের প্রতি আরো যত্নশীল হয়। সম্মাননা পেতে উদগ্রীব হয়ে উঠে নিজের সেরা সেবাটা দিতে সচেষ্ট হয় সবাই। এতে মাঠ পর্যায়ে সিএইচসিপি এবং মাঠ কর্মীদের সেবার মান বেড়েছে অনেক গুণ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার গুণগত মান বাড়াতে এবং হাসপাতালে কর্মরতদের নিরাপত্তা বিধান করার পাশাপাশি  সেবা কর্মকান্ড মনিটরিং করতে হাসপাতালকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসেন। সেবা প্রাপ্তি দ্রুত এবং সহজলভ্য করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পিএবিএক্স লাইন চালু করেন। তার এই উদ্যোগের ফলে হাসপাতালে কর্মরতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবার পাশাপাশি বেড়েছে  সেবার মান, দ্রুততম সময়ে সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে,রোগীদের হয়রানি কমেছে অনেকাংশে।
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মান সম্মত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে নিয়মিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের সময় যেসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নেই এই ধরণের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ ঘোষণা করেন এবং যারা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটায় তাদের সতর্ক করেন।
কমিউনিটি ক্লিনিকে আগত গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়ার জন্য ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি জুম মিটিং এপস এর সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জুম লিংক এর মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ প্রদান করেন গাইনি কনসালটেন্ট।
মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা নিয়মিত কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন,  ইপি আই সেশন পরিদর্শন, উঠান বৈঠক, স্কুল হেলথ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডা.মো: মীর হোসেন মিঠুর নানা ধরনের উদ্ভাবনী কর্মকান্ড  ও বিশেষ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রতি  বুড়িচং বাসীর আস্থা ফিরে এসেছে। সেবা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা এখানে সেবার মান নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে। সেবাগ্রহীতার সংখ্যা ও বেড়েছে অনেক।
বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীদের ফুল কোর্স এন্টিবায়োটিক দেয়া হয়, বহির্বিভাগে আগে যেখানে প্রতিদিন ১৫০-২০০ রোগী হতো এখন সেখানে প্রতিদিন ৪০০-৪৫০ রোগী হয়, জরুরি বিভাগে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন রোগী সেবা গ্রহণ করে থাকে, অন্তঃবিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৪০-৪৫ জন রোগী ভর্তি থাকে। গড় বেড অকুপেন্সী রেট ১০৭-১০৮ শতাংশ এর উপরে থাকে।
বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে সুসজ্জিত এনসিডি কর্ণার।  এনসিডি কর্ণার থেকে প্রতিদিন ২৫-৩০ জন সেবা গ্রহণ করেন। ডায়াবেটিস,উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্টের রোগীদের ৩০ দিনের ওষুধ দেয়া হয় এনসিডি কর্ণার থেকে।
প্রতিদিন প্যাথলজিতে সেবা নেন ১৪০-১৫০ জন রোগী। আগে প্যাথলজি থেকে যেখানে প্রতিমাসে ২০০০০-২২০০০ টাকা রাজস্ব জমা দেয়া হতো এখন সেই প্যাথলজি থেকে প্রতিমাসে ১ লাখ টাকার উপরে রাজস্ব জমা দেয়া হচ্ছে সরকারি কোষাগারে।
গর্ভবতীদের গর্ভকালীন এবং গর্ভোত্তর সেবা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু রয়েছে এ এন সি ও পিএন সি কর্ণার। প্রতি মাসে চার শতাধিক গর্ভবতী মহিলা এ এন সি সেবা নিয়ে থাকেন এবং ৫০ এর অধিক নারী সেবা নিয়ে থাকেন এএনসি ও পিএনসি কর্ণার থেকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাভাবিক প্রসব ও জরুরি প্রসূতি সেবা গ্রহণকারী মায়েদের বিনামূল্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এম্বুলেন্স সার্ভিস দেয়া হয়।
বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার চিত্র পাল্টে দেয়ার কারিগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডা.মো: মীর হোসেন মিঠু বলেন, স্বাস্থ্য সেবা একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা, একটি টিম ওয়ার্ক। আজকে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান বাড়ানোর পিছনে রয়েছে আমার সহকর্মী, সহযোদ্ধাদের  অবদান। আমার হাসপাতালের পরিচ্ছন্ন কর্মী, ওয়ার্ডবয়, আয়া, নার্স, মিডওয়াইফ, অফিস স্টাফ, চিকিৎসক  থেকে শুরু করে আমার মাঠ কর্মী, সিএইচসিপি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বদলে গেছে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার চিত্র। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
আমি স্মরণ করছি  বুড়িচং উপজেলার মাটি ও মানুষের নেতা মরহুম আব্দুল মতিন খসরু সাহেবকে এবং ধন্যবাদ জানাই কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-বাহ্মণপাড়া)  আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আবুল হাসেম খান এমপি মহোদয়কে, সবসময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান কিভাবে বাড়ানো যায় এ বিষয়ে বিশেষ নজর রাখার জন্য।
আরো ধন্যবাদ জানাই বুড়িচং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আখলাক হায়দার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হালিমা খাতুন, জাইকা সহ সকলের প্রতি যারা বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান বাড়াতে সবসময়ই আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন।
বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান বাড়াতে আমাকে সবসময় দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, নানাভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন কুমিল্লা জেলার সুযোগ্য সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন। স্যারের সুযোগ্য নেতৃত্বে, সঠিক পরিকল্পনায় এগিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লা জেলার স্বাস্থ্য খাত, তারই ধারাবাহিকতায় বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান বেড়েছে। সাধারণ মানুষ সরকারের গৃহীত উন্নয়ন এবং স্বাস্ব্য সেবা পাচ্ছেন।সংবাদ প্রকাশঃ  ৩১-১০-২০২২ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন=  

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ