বরেন্দ্রঞ্চলে প্রশাসনের নাকের ডগায় কৃষি জমিতে পুকুর খননের প্রতিযোগীতা

সিটিভি নিউজের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন

সিটিভি  নিউজ ।।     মো.আককাস আলী,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি :- জমির প্রকৃতি পরির্বতন করা যাবে না’- এমন সরকারী নির্দেশ থাকলেও বরেন্দ্রঞ্চলের তিন ফসলি কৃষি জমিগুলো পরিণত করা হচ্ছে গভীর পুকুরে। ভূমি আইন উপেক্ষা করে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রশাসনের নাকের ডগায় দম্ভের সাথে কৃষি জমিতে পুকুর খননের প্রতিযোগীতায় নেমে পড়েছে এক শ্রেণীর মৎস্য ব্যবসায়ীরা। ওইসব কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। দেখার কেউ নেই। কর্তৃপক্ষ নিরব ভ’মিকায়। সচেতনদের দাবী পুকুর খননের এই প্রতিযোগীতা বন্ধ করা না হলে কৃষি জমির উপর পড়বে প্রভাব। দিনে দিনে কমে যাবে কৃষি জমি। এছাড়া ইটভাটার চাহিদা মেটাতে দেদারচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ফসলি জমির উপরিভাগে থাকা টপসয়েল। পাশাপাশি মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলে নষ্ট হচ্ছে প্রামীণ কাঁচা-পাকা রাস্তাগুলো। তথ্য অনুসন্ধানে যানাযায়, মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, খুদিয়াডাঙ্গার খুলুর বিল, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের সিংগা (টিটিহারী), গনেশপুর ইউনিয়নের ভেবড়া, ভালাইন ইউনিয়নের বনতসর, ভারশোঁ ইউনিয়নের ঠাকুরমান্দা সহ নওগাঁর মহাদেবপুর, আত্রাই ও রানীনগর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। পুকুর খনন ছাড়াও জেলার কয়েকটি এলাকার ফসলি জমির মাটিও কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। স্থানীয়রা জানান, জেলায় নির্দিষ্ট এক শ্রেণীর অসাধু চক্র ভাড়া বা কন্টাকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি খননের জন্য ভিকু মেশিন এনে এলাকায় ভূমি আইন উপেক্ষা করে একের পর এক ফসলি জমিতে পুকুর খনন করেই চলেছেন। এমনকি বাগানের জমির মাটি কেটে সেখানে পুকুর খনন ও করছেন কেউ কেউ। মহাদেবপুর উপজেলার স্বরুপপুর,চকচান,উত্তনগ্রাম,জোথরি,ভালাইন,চেরাগপুর,বগাপুর ও ফুলবাড়ি গ্রামের বেশ কয়েকটি পুকুর খননের কাজ চলছে এবং শেষ হয়েছে। ওইসব এলাকার কৃষক তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রশাসন জানার পর ঘটনাস্থল থেকে দুটি ভিকু মেশিনের ব্যাটারি খুলে নিয়ে গেলেও মাত্র দু’দিন পর ফের সেই ভিকু মেশিন দিয়েই দুটি পুকুর খনন সম্পূর্ন করেন জমির মালিকরা যা দেখে স্থানিয় লোকজন হতবাক। এমন আরো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, কোনো কোনো এলাকায় (এস্কেভেটর) ভিকু মেশিন আবার কোনো এলাকায় শ্রমিক লাগিয়ে মাটি কেটে ট্রাক্টরের সাহায্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মাটি। এসব মাটি খননে জমির শ্রেণী বদল বা প্রশাসনের কোন অনুমোদন নেয়া হয়নি। জমির মালিককে অর্থের লোভ দেখানো সহ বিভিন্নভাবে লোভে ফেলে কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আবাদি জমির উপরি ভাগের টপসয়েল। আবার কোথাও দিনের বেলায় ভিকু মেশিন বন্ধ রাখলেও রাতের বেলায় চুটিয়ে চলছে পুকুর খনন কাজ। এতে করে দিনদিন আশংখ্যাজনক হারে কমছে ফসলি জমির পরিমাণ। শস্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁ জেলা হারাবে সেই শস্য ভান্ডারের উপাধি বলেই মন্তব্য সচেতন মহলের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক গোলাম ফারুক হোসেন জানান, শিল্প কলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন কারণে দেশে প্রতিবছর এমনিতেই ১% হারে ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। এছাড়া ফসলি জমির উপরিভাগের ৬ ইঞ্চি পরিমাণ মাটিতে জৈব পদার্থ থাকায় একে টপসয়েল বলা হয়ে থাকে। জমির এই অংশ কোনো ভাবেই কেটে নেওয়া উচিত নয়।তিনি আরও বলেন, কৃষি জমির টপসয়েল কেটে নেওয়া হলে ওই জমিতে আর কাঙ্খিত ফসল উৎপাদন হবে না। এতে ফসল উৎপাদনের পরিমাণ কমে যাবে।যারা কৃষি জমি কেটে নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। অপরদিকে আবাদি জমি খনন করে পুকুর কাটা বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক সহ উপজেলা প্রশাসনের জরুরী ভাবে কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।#

সংবাদ প্রকাশঃ  ২৮-০১-২০২২ইং । (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে/লিংকে ক্লিক করুন=  

Print Friendly, PDF & Email