জামালপুরে শ্রমিক কল্যাণের নামে মাসে দেড় কোটি টাকা চাঁদা আদায়

সিটিভি নিউজ।।       কামরুজ্জামান কানু  সংবাদদাতা জানান ===    : জামালপুর পৌরসভা এলাকাসহ জেলার ৭টি উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে অটো বাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে প্রতি মাসে অন্তত দেড় কোটি টাকা চাঁদা আদায় করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। শ্রমিক কল্যাণের নামে বিপুল অঙ্কের চাঁদা আদায় করা হলেও শ্রমিকের কল্যাণে কোনো টাকাই ব্যয় করা হয় না বলে জানিয়েছেন অটোবাইক চালকরা।বিপুল অংকের এই চাঁদার টাকা চলে যাচ্ছে শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নেতা ও তাদের চক্রের পকেটে।পয়েন্টে পয়েন্টে এই চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে অটোবাইক চালকরা।

এছাড়া অভিযোগ উঠেছে, জেলার বিভিন্ন স্থানে অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির শাখা কমিটি দেওয়ার নামেও হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

অটোবাইক চালকদের অভিযোগ, জামালপুর পৌরসভা এলাকাসহ জেলার ৭টি উপজেলায় প্রতিদিন চলাচল করে অন্তত ১০ হাজার অটোবাইক। জামালপুর শহরের ৬টি পয়েন্টসহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকশ পয়েন্টে অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নামে প্রতি পয়েন্টে ১০ টাকা করে চাঁদা তুলছে সংঘবদ্ধ ওই চক্রটি। প্রতিদিন একটি অটোবাইক চালককে চাঁদা দিতে হয় ৫০ থেকে ৭০ টাকা। চাঁদা না দিলে অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির নিয়োজিত চাঁদাবাজরা লাঠি দিয়ে গাড়িতে বাড়ি মেরে গ্লাস ভেঙে দেয়। অনেক সময় চালকদের মারধর ও লাঞ্ছিত করে তারা। এতে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন যাত্রীরা। প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি চললেও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন টু-শব্দটিও করেন না।

কয়েকজন চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকারি দলের একজন শীর্ষ নেতার নাম ভাঙিয়ে এই চাঁদাবাজি চলছে। করোনা পরিস্থিতির আগে প্রতি পয়েন্টে চাঁদা দিতে হতো ২০ টাকা। করোনার কারণে চাঁদাবাজরা চাঁদার পরিমাণ অর্ধেক করেছে। এখন প্রতি পয়েন্টে চাঁদা দিতে হয় ১০ টাকা।

জামালপুর শহরের প্রধান সড়কে গেইট পাড়ে কথা হয় অটো চালক হুরমুজ আলীর সাথে। তিনি বলেন, ‘হারাদিন গাড়ি চালায়ে ইনকাম অয় ৭ তনে ৮শ ট্যাহা। মালিককে দিওন নাগে ৩ শ।ব্যাটারি চার্জের জন্য কারেন খরচা আরো ১শ ট্যাহা। এর মধ্যে চাঁন্দাবাজগরে দিওন নাগে ৭০/৮০ ট্যাহা। হারাদিন কষ্ট করে ঘরো নিয়ে যাই ৩ থেকে ৪শ ট্যাহা। এই কয়ডা ট্যাহা দিয়ে তো সংসার চলেনা বাপু।’

শহরের তমালতলায় কথা হয় অটোচালক বিল্লাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই প্রকাশ্যে এই চাঁদাবাজি চলছে।এ নিয়ে কোনো মহল কিছুই বলে না। গরিবের পক্ষে কেউ নাই।’

অটো চালক কাজিম উদ্দিনবলেন, ‘শ্রমিকের কল্যাণের নামে চাঁদা তোলা অইলেও শ্রমিকের সমস্যা বা দুর্ঘটনায় ওদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। শ্রমিকের কল্যাণের কতা কইয়ে চাঁদা তুইলে ওরা নিজেরাই মোটাতাজা অইতাছে। সরকারি দলের বড় একজন নেতার নাম ভাঙ্গায়ে তারা এই কাম করতাছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানছি ওই নেতা এই কামের সঙ্গে নাই। কিন্তু ওই নেতা আবার এই চাঁদাবাজি নিয়ে কিছু কয়ও না।’

জানা গেছে, বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি রেজিঃ নং এস-১১৩৮৭ জামালপুর জেলা শাখার প্রধান কার্যালয় করা হয়েছে শহরের রানীগঞ্জ বাজারে পৌরসভার সুপার মার্কেটে। এখান থেকে পরিচালিত হয় জেলার সব জায়গার অটোবাইকের চাঁদাবাজির কার্যক্রম।

বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি পদে আছেন জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ও পৌর শ্রমিক লীগের আহবায়ক মোজাম্মেল হক। আর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন পৌর শ্রমিক লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য বেলাল হোসেন।

চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলতে রাজি হননি অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি মোজাম্মেল হক।

তবে অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পুরো জেলায় তারা চাঁদাবাজি করেন না। শহরের ৬টি পয়েন্টে তারা রসিদ দিয়ে চাঁদা নেন। রসিদ বই বিক্রি করা হয়। ১০০ পাতার প্রতিটি বই বিক্রি করা হয় ৩০০ টাকা করে। চাঁদার টাকা অটোচালকদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়। কোন অটো দুর্ঘটনা হলে বা কোন ঘটনায় থানা পুলিশ আটক করলে চাঁদার টাকা ব্যয় করে সমস্যা সমাধান করা হয়। কোনো শ্রমিক মারা গেলে বা দুর্ঘটনায় আহত হলে তাদেরকেও অনুদান দেওয়া হয়।

সংবাদ প্রকাশঃ  ২০১২২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ