খিচুনিতে নয় শিশু হামজা’র মৃত্যু হয়েছে ফুফুর নির্মমতায়!

২০ মাস বয়সী আমির হামজার মৃত্যুর ৫মাস পর জানা গেল তাকে হত্যা করা হয়েছিল; আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে হত্যাকারীর ৬৪ ধারায় জবানবন্দী

সিটিভি নিউজ।।       এবিএম আতিকুর রহমান বাশার ঃ সংবাদদাতা জানান=====
২০ মাস বয়সী আমির হামজা নামে এক শিশুর মৃত্যুর ৫ মাস পর জানা গেল খিচুঁনিতে নয়, মৃত্যু হয়েছে তার আপন ফুফুর নির্মমতায়।
ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, দেবীদ্বার উপজেলার ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সাইচাপাড়া গ্রামের সুলতান বাবুর্চির বাড়িতে। নিহত আমির হামজার(২০মাস) ওই গ্রামের আল-আমিন(৩২) ও সালমা আক্তার(২৬)’র এক মাত্র পুত্র এবং হত্যাকারী আপন ফুফু মোসা: স্বপ্না আক্তার(১৮) মোঃ সুলতান বাবুর্চির মেয়ে।
ঘটনার ৫ মাস পর পুলিশি তদন্তে ওই হত্যাকান্ডের জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত হামজার (ফুফু) স্বপ্না আক্তার(১৮)কে গত শনিবার দিবাগত রাতে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বপ্তা তার ভাইপোকে হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেলে রোববার (৩০ মে) কুমিল্লা ৪নং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, নিহত আমির হামজার বাবা হোটেলে চাকরি করেন এবং মাতা মোসাঃ সালমা আক্তার(২৬) পারিবারিক অভাব অনটনের কারনে কুমিল্লা মহানগর এলাকাল ইপিজেড-এ একটি পোষাক কারখানায় চাকুরি করেণ। সেই কারনে তার শিশু সন্তান আমির হামজাকে শ্বশুর-শাশুড়ী ও ননদ’র কাছে দেখভালের জন্য রেখে যান।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় রান্না করার সময় মায়ের অনুপস্থিতিতে হামজা কান্নাকাটি ও বিরক্ত করায় তার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে তার আপন ফুফ মোসা: স্বপ্না আক্তার (১৮) রান্নার কাজে ব্যবহৃত কাঠি দিয়ে স্বজোরে ঘারে আঘাত করলে অচেতন হয়ে পড়ে, এ অবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে শ^াসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তার খিঁচুনী রোগ দেখা দিয়েছে বরে স্থানীয়দের মধ্যে প্রচার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অস্বভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানালে পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার পূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন।
পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর তার মৃত্যু খিচুঁনী রোগে নয়, ঘারে আঘাত ও শ^াস রোধে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। পুলিশ ওই রিপোর্ট প্রাপ্তির পর ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামেন বলে পুলিশ জানান। ওই ঘটনায় নিহতের মা’ সালমা আক্তার গত ২৮ মে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন আসামীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-দেবী/২৪)।
রোববার নিহতের ফুফু স্বপ্না আক্তারকে কুমিল্লা ৪নং জুডিশিয়ার ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করলে সিনিয়র জুডিশিয়ার ম্যাজিষ্ট্রেট রোকেয়া বেগম’র নিকট হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে উল্লেখিত বক্তব্য প্রদান করেন। ম্যাজিষ্ট্রেট তার জবানবন্দী ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধ করে জেল হাজতে প্রেঢ়নের নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে নিহত আমির হামজার দাদা মোঃ সুলতান বাবুর্চি জানান, ঘর নির্মানের সময় আমার নাতী আমির হামজার ঘারে জানালার গ্রিল খুলে পড়লে আহত হয় এবং হাসপাতাল নেয়ার পথে মারা যায়।
নিহত আমির হামজার নানা, পাশ^বর্তী সুলতানপুর গ্রামের নায়েব আলী জানান, আমার মেয়ে ইপিজেডে চাকরি করে, সাথে একমাত্র মেয়ে ইরামনি(৫ মাস)কে সাথে রাখত, মেয়ের জামাই কুমিল্লা হোটেলে চাকরি করে। একমাত্র নাতী হামজাকে বাড়িতে তার দাদা-দাদী ও ফুফুর হেফাজতে রেখে যায়। তার ফুফুই তাকে হত্যা করল। হত্যার ১৫/১৬দিন পর হামজা ফুফু মোসাঃ স্বপ্না আক্তারকে তরিঘড়ি করে পাশর্^বতী বুড়িচং উপজেলার কোরপাই গ্রামের সেলিম মিয়ার সাথে বিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় দেবীদ্বার অফিসার ইনচার্জ(ওসি তদন্ত) ছমি উদ্দিন জানান, ওই ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা হলেও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেখে হামজার স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, হত্যাকান্ড বলে নিশ্চিত হই। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের ফুফুকে গ্রেফতার পূর্বক কোর্ট হাজতে প্রেরন করা হয়েছে এবং ওই হত্যাকান্ডের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা, তা জানার চেষ্টা চলছে।

সংবাদ প্রকাশঃ  ৩১২০২১ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ