কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল ভোগান্তির শেষ নেই বিদেশগামীদের করোনার সনদ পেতে ৬ জেলার মানুষের হয়রানি

সিটিভি নিউজ ্। ।   কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান ===
আমি গত বুধবার সকাল ৭টায় করোনাভাইরাস সনাক্তের পরীক্ষা করানোর কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে এসেছেন সৌদি আবর প্রবাসী মো.সুমন মিয়া। তিনি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার বাসিন্দা। শুক্রবার সুমনের সৌদি যাওয়ার ফ্লাইট। করোনার সনদ না পেলে বিদেশে যেতে পারবেন না তিনি। কিন্তু দুপুর প্রায় ১২ বাজতে চললেও এখনো করোনা শনাক্তের জন্য নমুনাই দিতে পারেননি তিনি। শুধু সুমন মিয়া নয়, এমন বিড়ম্বনায় প্রতিদিনই পড়ছেন অনেক প্রবাসী।
সুমন মিয়া জানান, আমি সকাল ৭টা বাজে এসেও নমুনা দিতে পারিনি। আবার অনেকে ১০টা বাজে এসেও আধা ঘণ্টার মধ্যেই নমুনা দিয়ে চলে যাচ্ছেন। সকাল ৭টায় এসে লাইনে দাঁড়ালেও তারা নমুনা নেওয়া শুরু করে ৯টা থেকে। দুপুর ১টার পর আবার নমুনা নিতে চায় না। এতে অনেকের বিদেশ যাত্রায় দেখা দেয় চরম অনিশ্চয়তা।
গত বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমিল্লা নগরীর জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে জানা গেছে, করোনার সনদ পেতে প্রায় প্রতিদিনই এমন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিদেশগামীদের। কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে ওই হাসপাতালের একটি নির্দিষ্ট স্থানে ৬ জেলার বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার নমুনা নেওয়া হয়। সেখানে নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ল্যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার বিদেশগামীদের জন্য কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ বাধ্যতামূলক করলেও সব জেলায় প্রবাসীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করেনি। যার কারণে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে এসে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার প্রবাসীদের করোনা পরীক্ষার নমুনা দিয়ে একদিন পরে সনদ নিতে হচ্ছে। অনেকে আবার অনলাইনের মাধ্যমেও নমুনা দেওয়ার পরদিন সনদ সংগ্রহ করছেন। তবে কুমিল্লায় আসা এ ছয়টি জেলার বিদেশগামী যাত্রীদের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রদান এবং সনদ সংগ্রহে চরম হয়রানি আর বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। নমুনা সংগ্রহে ধীরগতিসহ নানা জটিলতায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। বয়স্ক এবং নারীদের এই সমস্যায় অনেক বেশি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। প্রতিদিন করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য ৬ জেলা থেকে ওই হাসপাতালে ৪ থেকে ৫’শ বিদেশগামী আসছেন।
আমি গত বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করাতে ৬ জেলা থেকে এসেছেন চার শতাধিক বিদেশগামী। এসব বিদেশগামীদের সকলেই এদিক-ওদিক ছুটছেন। অনেক ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাদের লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে দু’বার। একবার দাঁড়াতে হচ্ছে পরীক্ষার ফি জমা দেওয়ার জন্য, আরেকবার দাঁড়াতে হচ্ছে নমুনা দেওয়ার জন্য। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া যেসব প্রবাসীদের স্মার্ট কার্ড রয়েছে তারা ৩’শ টাকায় পরীক্ষা করাতে পারছেন। আর যাদের কার্ড নেই তাদের এক হাজার ৫’শ টাকা খরচ হচ্ছে।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থেকে আসা বাবুল মিয়া বলেন, করোনা পরীক্ষা করাতে এসে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ আবেদন গ্রহণ এবং নমুনা সংগ্রহে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি। এখানে কোন শৃঙ্খলা নেই। মানুষ শুধু ধাক্কাধাক্কি করছে।
চাঁদপুরের কচুয়া থেকে আসা ওমান প্রবাসী আবু সাঈদ বলেন, আমি সকাল সাড়ে ৬টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু এখন সাড়ে ১১টা বাজলেও নমুনা দিতে পারিনি। অথচ ১১টার দিকে এসেও ভেতরে ঢুকেও অনেকে নমুনা দিয়ে চলে গেছে। ভেতরে টাকা দিলে সব কাজই দ্রুত হয়ে যায়।
ফেনীর লালপুর থেকে আসা দুবাই প্রবাসী জানে আলম বলেন, তারা চরম ধীরগতিতে নমুনা নিচ্ছে। আমার ফ্লাইট বৃহস্পতিবার রাত ১টায়। কিন্তু দুপুর ১২টা বাজলেও এখনো নমুনা দিতে পারিনি। দুপুর ১টার পর তারা নমুনা সংগ্রহ করে না। এর আগেও তাদের কারণে অনেক জেলার প্রাবাসীদের বিদেশ যাওয়া বাতিল হয়েছে। পরে পুনরায় টিকিট করে বিদেশ যেতে হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে আসা পারভেজ হোসেন বলেন, এখানে প্রতিদিন প্রায় ৫’শ প্রবাসী আসেন পরীক্ষা করাতে। কিন্তু মাত্র একটি বা দু’টি বুথে নমুনা নেওয়া হয়। আমাদের দাবি এই হয়রানি বন্ধে প্রতিটি জেলায় বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হোক। আর না হয় এখানে আরও কয়েকটি বুথ বাড়ানো হোক এবং নজরদারির মাধ্যমে অনিয়ম বন্ধ করা হোক।
এসব প্রসঙ্গে কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, আমাদের লোকবলের চরম সঙ্কট রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এনে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪’শ জনের নমুনা নেওয়া হচ্ছে। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত ল্যাবে জমা দেওয়া যায় ততক্ষণ পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করছি। অনেক সময় ২টার পরও নমুনা নেওয়া হচ্ছে। আর ৬ জেলার লোক আসায় এবং জনবল কম থাকায় কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে প্রবাসীদের। তারপরও আমার চেষ্টা করছি সকলকে না ফিরিয়ে সঠিক সময়ে সনদ দেওয়ার জন্য। এছাড়া অন্যান্য অনিয়ম থাকলে সেগুলো তদন্ত করে দেখা হবে।সংবাদ প্রকাশঃ  ২২২০২১ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ