আবেদন করলেই হোল্ডিং টেক্স পর্যালোচনা করে কমিয়ে পূনঃ নির্ধারণ করছি=মেয়র সাক্কু

সিটিভি নিউজ।। ওমর ফারুকী তাপস   নিজস্ব সংবাদদাতা  জানান ==।।  সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লা মহানগরী জুড়ে চলছে সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং টেক্স নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। জনগণের মনে একটাই প্রশ্ন, হঠাৎ কেন এত টাকা টেক্স বৃদ্ধি? পূর্বে যে হোল্ডিং টেক্স ছিলো ৩৪০টাকা সেই হোল্ডিং টেক্স এখন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৩৬০টাকা। এখানে প্রকৃত ঘটনা কি? তা জানতে নগর ভবনে গিয়ে দেখা যায় কর নির্ধারণ শাখা ও কর আদায় শাখায় মানুষের উপচে পড়া ভীড়। সকলেই এসেছেন হোল্ডিং টেক্স কমানোর আবেদন করতে।
জানা যায়, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক এবছর গ্রাহককে প্রস্তাবিত হোল্ডিং টেক্সের যে নোটিশ দেয়া হয়েছে, এতে প্রস্তাবিত টেক্সের পরিমান গতবারের তুলনায় এবার তিনগুন বা চারগুনেরও বেশি। নোটিশে উল্লেখ আছে ১৫কার্যদিবসের মধ্যে এসে মেয়র বরাবর নির্ধারিত পি-ফরম(আপত্তি ফরম) এর মাধ্যমে আপিল করা জন্য। আপিলের পর গ্রাহককে শুনানীর জন্য নির্ধারিত তারিখে আসতে বলা হয়। জানাগেছে পরবর্তীতে মেয়রের উপস্থিতিতে প্রস্তাবকৃত হোল্ডিং টেক্সটি শুনানীর মাধ্যমে গ্রাহকের বক্তব্য শুনে বিশেষ বিবেচনায় কখনও অর্ধেক বা কখনো তিনভাগের এক ভাগ রেখে, বাকি দুই ভাগ টেক্স মওকুফ করে নতুন ভাবে টেক্স নির্ধারণ করে দেন মেয়র ।
এ বিষয়ে গত ১৩ অক্টোবর দুপুরে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে নগরীতে হোল্ডিং টেক্স বৃদ্ধি বিষয়ে কথা বলার জন্যে গিয়ে দেখাযায় নগর ভবনের দ্বিতীয়তলায় মিলনায়তনে মেয়র সাক্কু অন্যান্য কাউন্সিলদের সাথে নিয়ে বসে জনমানুষের বাড়ীঘরের ট্যাক্স বৃদ্ধি বিষয়ে আপত্তির কথা শুনছেন এবং বাড়ীর মালিকদের সাথে কথা বলে যৌক্তিক ভাবে হোল্ডিং টেক্স কমিয়ে পূনঃ নির্ধারণ করছেন।ট্যাক্সদাতাগণ হাসি মুখেই বেরহয়ে যাচ্ছেন। সিটিভি নিউজের সাথে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোঃ মনিরুল হক সাক্কু বলেন,
জনগণের টেক্সের টাকা দিয়েই চলছে সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশনের আয়ের মূল উৎস’ই হলো হোল্ডিং টেক্স। এই হোল্ডিং টেক্সের আয় থেকেই শহরের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ, রাস্তার বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানি লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করণ সহ আরো অনেক উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হয়; অর্থ্যাৎ জনগণের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এই টেক্সের আয় থেকে ব্যয় করা হয়। সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীদের বেতন ভাতা গাড়ীর তেল সবই ব্যয় হচ্ছে এই ট্যাক্সের টাকা থেকে। গত ৫বছরের তুলনায় খরচ বেড়েছে কয়েকগুন।নগরবাসীর সেবারমানও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এলাকা ও ওয়ার্ড ভিত্তিক কিছুটা তারতম্য আছে। আবার নগরীর বিভিন্ন এলাকার র‌্যান্ডের ভ্যালু ও বেশ কম আছে। সেসব দিক মাথায় রেখেই টেক্স পূনঃ নির্ধারন করা হচ্ছে,যারা আবেদন করছে তারাই সুফল পাচ্ছেন। সরকারী নিয়ম মেনেই কর্মকর্তা কর্মচারীগন টেক্স নির্ধারণ করে থাকেন। যাদের এলাকায় ঘরভাড়া ও রুমভাড়া বেশী তাদের টেক্সও বেশী হবে। এই ক্ষেত্রে বস্তি এলাকা শহরের শেষ সীমান্ত এলাকার বাড়ীভাড়া একরকম নয়। শহরের কান্দিরপাড় ঝাউতলা,এলাকা আর শংরাইশ কিংবা কাজীপাড়া এলাকার টেক্স একরকম হবেনা।
নিয়ম মোতাবেক প্রতি ৫বছর অন্তর অন্তর গৃহকর বা হোল্ডিং টেক্স বৃদ্ধি করা হয়। তাই, বরাবরের মতো এবারও সেই নিয়ম মেনে হোল্ডিং টেক্স বৃদ্ধি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন রেইটে টেক্স নির্ধারণ করা হয়েছে বলে এইবারের গৃহকর বা হোল্ডিং টেক্স একটু বেশি মনে হচ্ছে। আর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করার সুযোগ তো আমার নেই।
কিভাবে টেক্স বা গৃহকর নির্ধারণ করা হয়? এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র সাক্কু বলেন, নগরীতে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বসবাস করে। সকলের দৈনন্দিন আয়-রোজগার সমান নয়। উচ্চবিত্ত ও নি¤œবিত্ত মহল্লা বিবেচনা করে নগরীর যে সকল মহল্লার বাসিন্দারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল এবং দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে, তাদের জীবনধারণের সুবিধার্থে হোল্ডিং টেক্স নির্ধারণের বেলায় রুম প্রতি মাসিক ভাড়া কম হারে হিসাব করে প্রস্তাবিত কর (টেক্স) ধার্য্য করা হয়।
তবে নগরীর সকল শ্রেণীর জনগণের কথা বিবেচনা করে সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত পি-ফরম(আপত্তি ফরমের) মাধ্যমে আপিল করার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে আপিলের বিপরীতে আমরা বিশেষ বিবেচনায় টেক্স নির্ধারণ করছি। ধরুন, কারো টেক্স যদি বছরে মন্ত্রণালয়ের দেয়া রেইট অনুযায়ী ২০হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়, তখন আপিলের শুনানীর মাধ্যমে বিশেষ বিবেচনায় তা আমরা বছরে ৭হাজার বা ৬হাজার টাকা করে দিচ্ছি। এই যে, এর মাঝে ১৩/১৪ হাজার টাকা মওকুফ করা হয় তার জন্য আমাকে (মেয়র সাক্কু) মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কয়েকবার চিঠির মাধ্যমে আমার কাছে থেকে এই মর্মে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে যে, কেন আমি এই টেক্স বা গৃহকর মওকুফ করে থাকি? উক্ত কৈফিয়তের বিপরীতে আমি জবাব দিয়েছি যে, কুমিল্লাবাসী আর্থিকভাবে ততটা স্বচ্ছল নয়। এখনো আমার নগরীতে উচ্চবিত্তের চেয়ে খেটে খাওয়া নি¤œবিত্ত মানুষের সংখ্যা বেশি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মতো টেক্স নির্ধারণ করলে তা পরিশোধ করা কুমিল্লাবাসীর পক্ষে কষ্টসাধ্য ও অসম্ভব বটে। আমাকে সিটি কর্পোরেশন চালাতে হলে শুণানীর মাধ্যমে বিশেষ বিবেচনায় টেক্স কমানোর সুযোগ দিতে হবে। কুমিল্লাবাসীর কথা চিন্তা করে আমি সর্বদা মন্ত্রণালয়ে যোগযোগ করছি। কিন্তু তারপরেও যদি কুমিল্লাবাসী না বুঝে তাহলে আর কি করা!
নগরীর জনগণের সেবার মান বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে নির্ধারিত টেক্স মেনে নিয়ে নির্ধারিত সময়ে সিটিকর পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ জানান মেয়র সাক্কু।
এই যে, কিছুদিন পর পর বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিলের মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে কিন্তু গ্রাহকরা সহজেই মেনে নিচ্ছে। তবে হ্যাঁ হয়তো বলবে যে, আমরা তো ব্যবহার করছি। কিন্তু ব্যবহার যা হচ্ছে, বিলের মূল্য বেড়ে তো টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। তখন কিছুই না বলে সকলেই মেনে নিচ্ছে। ঠিক তেমনি ভাবে টেক্সের ব্যাপারটাও যদি সহজ ভাবে মেনে নেয়, দেখা যাবে আহামরি কিছুই নয়।
অনেকেই অভিযোগ করেছে যে, টিনের ঘরের টেক্স বেশি হয়েছে। ধরুন একটি টিনের ঘরের টেক্স যদি বছরে ৩০০০টাকা প্রস্তাব করা হয়, সেক্ষেত্রে শুনানীর মাধ্যমে বিশেষ বিবেচনায় তা হচ্ছে ১০০০ বা ৯০০টাকায়। তাহলে বছরে ৯০০টাকা হলে প্রতি মাসে পড়ছে ৭৫টাকা। তো সিটি কর্পোরেশন কি মাসে ৭৫টাকা পাবার অধিকার নেই? এই সময়ে উপস্থিত ছিলেন ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর আল আমিন সাদি,১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইমরান বাচ্চু, মহিলা কাউন্সিলর রো্মা আক্তার সাথি,  ও  উম্মে কুলসুম, এডভেকেট আশফিকুর রহমান,সহকারী প্রকৌশলী শামসুন্নাহার,ট্যাক্স অফিসার জামাল খা  উপস্থিত ছিলেন। । (আরো বিস্তারিত জানতে ভিডিওটি দেখুন) https://www.youtube.com/watch?v=2l4Ksqpc0nI

সংবাদ প্রকাশঃ  ১৩১০২০২০ইং (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like সিটিভি নিউজ@,CTVNEWS24   এখানে ক্লিক করে সিটিভি নিউজের সকল সংবাদ পেতে আমাদের পেইজে লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুনসিটিভি নিউজ।। See More =আরো বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন=   

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ