আইনি জটিলতায় আটকে আছে ঝালকাঠি ইকোপার্ক উন্নয়ন কাজ

সিটিভি নিউজ।।   মোঃ নজরুল ইসলাম,  ঝালকাঠি:: আইনি জটিলতায় আটকে আছে ঝালকাঠির তিন নদীর মোহনায় নয়নাভিরাম ইকোপার্ক উন্নয়নের কাজ। এক ব্যক্তি ইকোপার্কের কিছু জমি নিজের দাবি করে আদালতে মামলা করায় এই জট শুরু হয়। ইকোপার্কের উন্নয়নে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে এলেও জট কবে খুলবে তা জানে না কেউ। মামলা নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর জোরালো ভূমিকা না থাকারও অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ।
স্থানীয়দের দাবি, কিছুদিন আগে রহস্যজনক কারণে রাষ্ট্র হেরে যায় ইকোপার্ক মামলায়। অভিযোগ রয়েছে, মামলায় ধার্য তারিখে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। অথচ জেলা প্রশাসন এ মামলার সমন বা নোটিস গ্রহণ করেছেন। অবশ্য পরে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করায় ওই রায় আপাতত স্থগিত করেছেন আদালত।
ঝালকাঠির গাবখান চ্যানেল, সুগন্ধা, বিশখালী ও ধানসিঁড়ি নদীর মোহনায় সরকারের ১ নম্বর খতিয়ানের ২০-২৫ একর জমিতে গড়ে উঠেছে ইকোপার্কটি। এই জমিসহ তিনটি মৌজার মোট ৮৮ দশমিক ৩৬ একর জমির মালিকানা দাবি করে ঝালকাঠি প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়রের ছেলে ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম তালুকদার। মাত্র ৫৯ দিনে এ মামলায় তিনি ডিক্রি পেয়ে যান। সর্বশেষ গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর মনিরুল ইসলাম তালুকদার একই আদালতে একই সম্পত্তির স্বত্ব ঘোষণার জন্য আরেকটি মামলা দায়ের করেন। ২০২২ সালের ৮ মার্চ এই মামলাতেও তিনি ডিক্রি লাভ করেন। মামলায় রাষ্ট্রপ্ক্ষ ছাড়াও স্থানীয় আরও চার জনকে বিবাদী করা হয়। তবে জেলা প্রশাসনের দাবিÑ ইকোপার্কের ২০-২৫ একর জমিসহ এখানকার তিনটি মৌজার ৮৮ দশমিক ৩৬ একর জমির অধিকাংশই সরকারের খতিয়ানে রয়েছে।
প্রথমে মামলায় হেরে যাওয়া এবং ধার্য তারিখে আদালতে উপস্থিত না থাকা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (জিপি) মীর রফিকুল ইসলাম আজম সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলার কোনো সমন বা নোটিস জেলা প্রশাসন থেকে যথাসময়ে জিপির দপ্তরে পৌঁছেনি। যার কারণে জিপির দপ্তর এ বিষয় অবগত ছিল না এবং ধার্য তারিখে আদালতে উপস্থিত হতে পারেনি। কিন্তু পরে আমরা ডিক্রি রদের মামলা করে স্থগিতাদেশ পেয়েছি।
বিগত জেলা প্রশাসকের সময় এ মামলার রায় হওয়ায় নতুন জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারেননি। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে নতুন জেলা প্রশাসকের প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে প্রশাসনের পক্ষে জানানো হয়, এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেছে এবং গুরুত্ব দিয়েই মামলাটিকে পরিচালনা করা হবে।
কয়েক দফা চেষ্টা করেও ইকোপার্কে জমি দাবি করে মামলা করা মনিরুল ইসলামের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার আইনজীবী মাহবুবুল আলম কবির সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলায় সরকার ও স্থানীয় কয়েকজনের নামে রং রেকর্ড হয়েছিল। সরকার পক্ষ এই মামলার শুনানির নোটিস গ্রহণ করলেও তারা ধার্য তারিখে আদালতে হাজির হয়নি। এ ছাড়া স্থানীয় যারা বিবাদী ছিলেন, তারা বাদীর দাবি মেনে নেওয়ায় এ মোকদ্দমায় আদালত বাদীপক্ষে রায় দেন। তবে পরে সরকার পক্ষের ডিক্রি রদ মামলার কারণে আদালত ইতঃপূর্বে বাদী মনিরুল ইসলামের পক্ষে দেওয়া রায় স্থগিত করেন।
দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ পর্যটনকেন্দ্র ইকোপার্ক রক্ষায় আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা। গঠন করেছেন ইকোপার্ক রক্ষা আন্দোলন কমিটি। এ কমিটির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পৃথক একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন ও পথসভাসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
ইকোপার্ক রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল সাংবাদিকদের বলেন, ঝালকাঠির ফুসফুস হিসেবে পরিচিত নয়নাভিরাম ইকোপার্ক রক্ষায় আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
পরিবেশকর্মী জুয়েল হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, ঝালকাঠি ইকোপার্ক রক্ষায় আমরা বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন- বাপাসহ পরিবেশ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’সংবাদ প্রকাশঃ ১৬০১২০২৩ ইং সিটিভি নিউজ এর  (সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন) (If you think the news is important, please share it on Facebook or the like  See More =আরো বিস্তারিত জানতে ছবিতে ক্লিক করুন

(সংবাদটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে দয়া করে ফেসবুকে লাইক বা শেয়ার করুন)
(If you think the news is important, please like or share it on Facebook)
আরো পড়ুনঃ